মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ: একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের জীবনী
এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট আইনজীবী, রাজনীতিক এবং মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহর জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তিনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি যিনি তাঁর জীবদ্দশায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:
মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ১৯২৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর শালেবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৩ সালে পাহাড়পুর উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৪৫ সালে রাজশাহী গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯৪৭ সালে একই কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ এবং ১৯৫৩ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
শিক্ষকতা ও আইনজীবীতা:
শিক্ষাজীবনের পর ১৯৫২-৫৩ সালে তিনি কীর্ত্তিপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ১৯৫৩-৫৪ সালে চক-আতিকা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিন বছর নওগাঁ বশিরউদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ১৯৫৭ সালে নওগাঁ মহকুমা আদালতে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
রাজনৈতিক জীবন ও মুক্তিযুদ্ধ:
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি নওগাঁ মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিপুর (মোহতীপুর) যুব ক্যাম্পের ক্যাম্প প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১২ নভেম্বর তিনি জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ডেপুটি স্পিকারের পদেও অধিষ্ঠিত ছিলেন।
মৃত্যু:
১৯৮৭ সালের ৯ মার্চ মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ পরলোক গমন করেন।
উপসংহার:
মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। আইনজীবী, শিক্ষক, রাজনীতিক এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর জীবন ও কর্ম আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে স্মরণীয় থাকবে।