মোহাম্মদ তোয়াহা: ভাষা আন্দোলনের এক অসামান্য নেতা
মোহাম্মদ তোয়াহা (২ জানুয়ারি ১৯২২ - ২৯ নভেম্বর ১৯৮৭) ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন একজন সক্রিয় ভাষা আন্দোলন কর্মী, সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ এবং মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণকারী। তার জন্ম নোয়াখালী জেলার (বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলার) রামগতি উপজেলার হাজিরহাট গ্রামে। তিনি ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে উপ-সভাপতি (ভিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ভাষা আন্দোলনের সময় তোয়াহা ছিলেন অন্যতম ছাত্র নেতা। তিনি আন্দোলনের প্রচার-প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, পোস্টার, লিফলেট ও নিবন্ধ তৈরি করেছিলেন। ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে সচিবালয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং নির্যাতনের শিকার হন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির নেতা হিসেবে তিনি সরকারের সাথে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন এবং মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সাথেও ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করেন। আরবি লিপিতে বাংলা লেখার প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করেন এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের সাথে যুক্ত ছিলেন।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও তোয়াহা রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান মজদুর ফেডারেশন গঠন করেন, জাতীয় আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ্মীপুর ও রামগতি অঞ্চলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তাকে গ্রেফতারের জন্য ওয়ারেন্ট জারি করা হয় এবং তিনি আত্মগোপনে থাকেন। ১৯৭৬ সালে ওয়ারেন্ট প্রত্যাহারের পর তিনি আবার প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন। তিনি ১৯৮৭ সালের ২৯শে নভেম্বর লক্ষ্মীপুরের রামগতির হাজিরহাটে মৃত্যুবরণ করেন।
মোহাম্মদ তোয়াহার জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়, যা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মোহাম্মদ ইয়াছিন: একজন সমবায় কর্মী ও পুরস্কার বিজয়ী
মোহাম্মদ ইয়াসিন (ব্রিটিশ-পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ): বেডফোর্ডের সংসদ সদস্য