দীর্ঘ ও সম্মানজনক কর্মজীবনের অধিকারী ড. মো. শমশের আলী বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ এবং প্রশাসক। তিনি ১৯৩৭ সালের ২১শে নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক সূত্রে তিনি যশোর সদর থানার সিঙ্গিয়া গ্রামের (বর্তমানে বসুন্দিয়া) বাসিন্দা। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় চুয়াডাঙ্গা থেকে। পিতার চাকরির কারণে পরিবার ভারতের চব্বিশ পরগনা যায়, সেখান থেকে ১৯৪৮ সালে যশোরে ফিরে আসেন। যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এস.সি পাশ করার পর ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন পদার্থবিজ্ঞানে। ১৯৫৯ সালে অনার্স এবং ১৯৬০ সালে এম.এস.সি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাত্ত্বিক নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬১ সালে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে ঢাকার আণবিক শক্তি কেন্দ্রে যোগদান করেন। ১৯৭০ সালে তিনি আণবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন। তিনি ১৯৮২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৯২-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য এবং ২০০২-২০১০ সাল পর্যন্ত সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ছিলেন। ২০০৪-২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ড. শমশের আলী বিজ্ঞান ছাড়াও ধর্ম ও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সংস্থার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বেশ কিছু পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি কুরআনিক সায়েন্স নিয়েও গবেষণা করেছেন।