মূলা (Raphanus sativus) হলো একটি জনপ্রিয় মূল শাকসবজি যা বিশ্বব্যাপী চাষ হয়। এর তীব্র গন্ধ ও স্বাদ, এবং বিভিন্ন আকার, রঙ ও আকৃতির জন্য এটি জনপ্রিয়। মূলার উৎপত্তি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, যদিও এখন এটি বিভিন্ন দেশে চাষ হয়। ঐতিহাসিকভাবে, গ্রীক ও রোমানরা ছোট, বড়, গোলাকার, লম্বা, মিষ্টি ও তেতো বিভিন্ন ধরনের মূলা চাষ করেছে। ১৫৪৪ সালে জার্মান বোটানিস্টরা ৪৫ কেজি ওজনের মূলা আবিষ্কার করার কথা বলেছেন। জাপানের সাকুরাজিমা মূলা বৃহৎ আকারের জন্য বিখ্যাত।
বিভিন্ন জাতের মূলা বিদ্যমান। ছোট মূলা সাধারণত এক মাসের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়, আর বড় জাতের মূলা যেমন দাইকন, কয়েক মাস সময় নেয়। মূলা গাছের গ্লুকোসাইনোলেট, মাইরোসিনাস এবং ইসোথিওসায়ানেট নামক রাসায়নিক যৌগের কারণে এর তীব্র গন্ধ ও স্বাদ। মূলা কাঁচা সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়, তবে রান্না করেও খাওয়া যায়। মূলার পাতাও খাওয়া যায়, এবং এর বীজ থেকে তেলও উৎপাদন করা হয়।
মূলা একটি দ্রুত বর্ধনশীল শীতকালীন ফসল। আর্দ্র আবহাওয়ায় বীজ ৩-৪ দিনে অঙ্কুরোদগম হয়। সম্পূর্ণ রোদে বেলে দো-আশ মাটিতে মূলা ভাল জন্মায়। মূলার জন্য জল এবং আগাছা নির্মূল প্রয়োজন। মূলা অন্যান্য ফসলের সাথে সহাবস্থানকারী ফসল হিসেবে ও ব্যবহার করা হয়, কারণ এটি কিছু কীটপতঙ্গ দূরীকরণে সহায়তা করে। তবে, শুয়োপোকা, গোবরে পোকা এবং অন্যান্য পোকামাকড় মূলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর প্রায় ৭ মিলিয়ন টন মূলা উৎপাদিত হয়, যা বিশ্বের মোট সবজি উৎপাদনের প্রায় ২%। মেক্সিকোতে ডিসেম্বরের ২৩ তারিখে 'নাইট অফ দা রেডিস' উৎসব পালিত হয়, যেখানে বড় আকারের মূলা কাজে লাগানো হয়। জাপান ও কোরিয়ায় মূলার পুতুল শিশুদের খেলনা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১০০ গ্রাম কাঁচা মূলাতে ১৬ ক্যালরি শক্তি থাকে এবং এতে ভিটামিন সি ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।