মুহাম্মদ ইসহাক

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

মুহাম্মদ ইসহাক: একজন সুফি সাধক ও আলেম

মুহাম্মদ ইসহাক বাংলার একজন বিশিষ্ট সুফি সাধক ও ধর্মীয় পণ্ডিত ছিলেন। ১৮৮৩ সালে ফেনীতে জন্মগ্রহণকারী ইসহাক স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর কুমিল্লার একটি মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য মক্কাযাত্রা করেন এবং সেখানকার সাওলাতিয়্যা মাদ্রাসায় এগারো বছর ধরে ইসলাম ও আরবি ভাষায় পড়াশোনা করেন। শায়খুদ-দালায়িল আবদুল হক মুহাজিরের অধীনে তিনি শিক্ষা লাভ করেন এবং পরবর্তীতে ঐ মাদ্রাসাতেই শিক্ষকতা করেন।

মক্কা থেকে ফিরে দেশে, তিনি সক্রিয়ভাবে সুফি সাধনায় লিপ্ত হন এবং কেরামতের অধিকারী বলে পরিচিতি লাভ করেন। লোকজন তার কাছে হেদায়েতের জন্য আসতে থাকে। তিনি কুমিল্লা, নোয়াখালী, বরিশাল, হাতিয়া ও সন্দ্বীপসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে মানুষের মধ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেন। বহু লোক তাঁর মুরিদ হন। পরবর্তীতে, কেরামত আলী জৈনপুরীর দৌহিত্র আবদুর রবের হাতে বায়আত গ্রহণ করেন এবং জৈনপুরীদের সুফিবাদে প্রভাবিত হন।

১৯৩৬ সালে তিনি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় একটি এতিমখানা স্থাপন করেন এবং তার সমস্ত স্থাবর সম্পত্তি এতে দান করেন। এই এতিমখানার নাম রাখা হয় 'ইসহাকিয়া এতিমখানা'। তিনি ঈদগাহ, মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণেও অর্থায়ন ও সহযোগিতা করেন। 'তাঁহর তালীমে হাককানী ওয়া ফুয়ূদে ইসহাকী' শিরোনামে একটি উর্দু গ্রন্থ রচনা করেন, যেখানে সুফিবাদের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করেন। ১৯৩৮ সালের ১৮ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • মুহাম্মদ ইসহাক ছিলেন একজন বিশিষ্ট সুফি সাধক ও আলেম।
  • তিনি ১৮৮৩ সালে ফেনীতে জন্মগ্রহণ করেন।
  • মক্কার সাওলাতিয়্যা মাদ্রাসায় তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।
  • তিনি কেরামতের অধিকারী ছিলেন এবং বহু লোকের মুরিদ হন।
  • তিনি 'ইসহাকিয়া এতিমখানা' স্থাপন করেন।
  • তিনি 'তাঁহর তালীমে হাককানী ওয়া ফুয়ূদে ইসহাকী' গ্রন্থ রচনা করেন।
  • তিনি ১৯৩৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।