মানসিক ভারসাম্যহীনতা

আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:১৫ পিএম

মানসিক ভারসাম্যহীনতা বা মানসিক রোগ একটি জটিল বিষয় যা একাধিক ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দ্বারা বর্ণিত এবং ব্যাখ্যা করা হয়। এই নিবন্ধে আমরা মানসিক ভারসাম্যহীনতার বিভিন্ন দিক, এর প্রকারভেদ, লক্ষণ, কারণ এবং চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করব।

মানসিক ভারসাম্যহীনতার প্রকারভেদ:

মানসিক ভারসাম্যহীনতা বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পেতে পারে। কিছু প্রধান প্রকারভেদ হল:

  • মনোবিকার (Psychosis): এতে চিন্তা, অনুভূতি এবং আচরণে সুস্পষ্ট অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। এতে ভ্রান্তি, মতিভ্রম (hallucination) এবং অসংলগ্ন আচরণ দেখা যেতে পারে। মনোবিকার আঙ্গিক (organic) অথবা ক্রিয়ামূলক (functional) হতে পারে।
  • নিউরোসিস (Neurosis): এটি আবেগজনিত জটিলতা, প্রধানত দুশ্চিন্তার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এটি মনোবিকারের তুলনায় কম মারাত্মক। উদাহরণস্বরূপ, আতঙ্ক, ভীতি, ও সাধারণ দুশ্চিন্তা।
  • ব্যক্তিত্বজনিত জটিলতা (Personality Disorder): দীর্ঘস্থায়ী, অনমনীয়, এবং অসংলগ্ন আচরণ ও অভিজ্ঞতা যা সামাজিক ও পেশাগত জীবনে বাধা সৃষ্টি করে।
  • বস্তুসংশ্লিষ্ট জটিলতা (Substance-Related Disorder): দীর্ঘস্থায়ী মদ্যপান বা মাদকাসক্তির ফলে সৃষ্ট অসংলগ্ন আচরণ।
  • শৈশবকালীন আচরণজনিত জটিলতা: অস্বাভাবিকতা, আক্রমণাত্মক আচরণ, অবসাদ, সিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি শিশুদের মধ্যে দেখা দিতে পারে।
  • বয়স্কদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: বয়স্কদের মধ্যে দুশ্চিন্তা, একাকিত্ব, এবং স্মরণশক্তি হ্রাসের মত সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • বিষণ্ণতা (Depression): দীর্ঘস্থায়ী দুঃখ বোধ, নিষ্ক্রিয়তা এবং জীবন উপভোগ করার ক্ষমতা হ্রাস।
  • সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia): উদ্ভট চিন্তা, ভগ্নমনস্কতা, এবং সামঞ্জস্যহীন আচরণ।
  • মানসিক প্রতিবন্ধী (Mental Retardation): মস্তিষ্কের ত্রুটিপূর্ণ বিকাশের ফলে সৃষ্ট অবনমিত বুদ্ধিমত্তা।

মানসিক ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ:

মানসিক ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ রোগের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:

  • চিন্তাশক্তির অস্বাভাবিকতা
  • অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা
  • অসংলগ্ন আচরণ
  • আবেগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা
  • ঘুমের ব্যাঘাত
  • ক্ষুধা পরিবর্তন
  • শারীরিক ক্লান্তি
  • আত্মহত্যার চিন্তা

কারণ:

মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণগুলি জটিল এবং জেনেটিক্স, রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা, জীবনযাত্রা, পরিবেশগত কারণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

চিকিৎসা:

চিকিৎসা পদ্ধতি রোগের ধরন ও তীব্রতা অনুসারে পরিবর্তিত হয়। এতে ঔষধ সেবন, মনোরোগ চিকিৎসা (psychotherapy), কাউন্সেলিং, এবং পুনর্বাসন অন্তর্ভুক্ত।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি:

বাংলাদেশে মানসিক ভারসাম্যহীনতা একটি ব্যাপক সমস্যা, কিন্তু সচেতনতা ও চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। পাবনা মানসিক হাসপাতাল সহ কিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই ক্ষেত্রে কাজ করছে। তবে, চিকিৎসক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও পর্যাপ্ত সুবিধার অভাব রয়েছে।

উপসংহার:

মানসিক ভারসাম্যহীনতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরি।

মূল তথ্যাবলী:

  • মানসিক ভারসাম্যহীনতা বিভিন্ন রোগের সমষ্টি
  • মনোবিকার, নিউরোসিস, ব্যক্তিত্বজনিত জটিলতা প্রধান প্রকারভেদ
  • লক্ষণগুলো রোগভেদে পরিবর্তিত হয়
  • জেনেটিক, রাসায়নিক, জীবনযাত্রাগত কারণ
  • ঔষধ, মনোরোগ চিকিৎসা, কাউন্সেলিং প্রধান চিকিৎসা পদ্ধতি
  • বাংলাদেশে সচেতনতা ও চিকিৎসার সুযোগ সীমিত

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - মানসিক ভারসাম্যহীনতা

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

এই ঘটনায় একজন ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।