মাধবপুর উপজেলা: হবিগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা
মাধবপুর উপজেলা বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। সোনাই নদীর তীরে অবস্থিত এই উপজেলাটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়ায় অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সাংগঠনিক কাঠামো স্থাপিত হয় এবং এখান থেকেই ১১টি সেক্টর ও ৩টি ব্রিগেড ফোর্সে বিভক্ত করে আনুষ্ঠানিক প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান ও আয়তন:
মাধবপুর উপজেলার আয়তন ২৯৫ বর্গ কিলোমিটার। এটি হবিগঞ্জ সদর হতে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। উপজেলার উত্তরে হবিগঞ্জ সদর ও লাখাই উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও ভারতের ত্রিপুরা, পূর্বে চুনারুঘাট উপজেলা ও ভারতের ত্রিপুরা এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও নাসিরনগর উপজেলা অবস্থিত।
ইতিহাস:
১৮০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মাধবপুর থানা ১৯৮৩ সালের ১ আগস্ট উপজেলায় উন্নীত হয়। উপজেলার নামকরণের সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি, তবে জনশ্রুতি রয়েছে যে, মহাদেব নামে একজন সাধকের নামানুসারে এ উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা:
মাধবপুর উপজেলা মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তেলিয়াপাড়া, হরিতলা, আন্দিউড়া, মনতলা, সুন্দরপুর, ধর্মঘর বাজার, হরষপুর প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
প্রশাসন ও জনসংখ্যা:
বর্তমানে মাধবপুর উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২৬৮৩১৫ জন। এখানে ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মানুষ বসবাস করে। এছাড়াও রয়েছে চা-জনগোষ্ঠী ও বাউল সম্প্রদায়। শিক্ষার হার ৪০%।
অর্থনীতি:
মাধবপুর উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। এখানকার প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, পাট, সরিষা, ডাল, গম। এছাড়াও রয়েছে চা বাগান।
উল্লেখযোগ্য স্থান:
মাধবপুর প্রেসক্লাব, মাধবপুর উপজেলা প্রেসক্লাব, সোনাই ও বোয়ালিয়া নদী, তেলিয়াপাড়া।