মধ্য আফ্রিকা: আফ্রিকার হৃদয়স্থলে অবস্থিত একটি বিশাল ও বহুমুখী অঞ্চল। এই অঞ্চলটির সংজ্ঞা বিভিন্ন সংস্থার মতে ভিন্ন হলেও, সাধারণত এখানে ১১টি দেশ অন্তর্ভুক্ত থাকে: অ্যাঙ্গোলা, ক্যামেরুন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, চাদ, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গ্যাবন, সাও টোমে এবং প্রিন্সিপে, বুরুন্ডি এবং রুয়ান্ডা। এই দেশগুলি মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্রসমূহের অর্থনৈতিক সম্প্রদায় (ECCAS)-এর সদস্য। ক্যামেরুন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, চাদ, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গ্যাবন এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্র মধ্য আফ্রিকার অর্থনৈতিক ও মুদ্রা সম্প্রদায় (CEMAC)-এর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় আফ্রিকান CFA ফ্রাঙ্ক ব্যবহার করে।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা: মধ্য আফ্রিকা কঙ্গো নদী অববাহিকা, চাদ হ্রদ এবং অন্যান্য জলাশয়ের ঘেরা, অরণ্য, ঘাসভূমি এবং মরুভূমি সমৃদ্ধ। এখানকার জনসংখ্যা প্রধানত বান্টু, নাইলো-সাহারান এবং নাইজার-কঙ্গো উপজাতির লোকজন দ্বারা গঠিত। কৃষিকাজ, পশুপালন এবং মাছ ধরা এই অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। তবে দারিদ্র্য এবং খাদ্য সংকটও ব্যাপক।
ঐতিহাসিক ঘটনা: মধ্য আফ্রিকার ইতিহাস প্রাচীন সভ্যতা, রাজ্য এবং সাম্রাজ্য দ্বারা পরিপূর্ণ। সাও, কানেম-বোর্নু, শিলুক, বাগুইরমি এবং ওয়াডাই রাজ্যের উত্থান ও পতন এই অঞ্চলের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বান্টুদের অভিবাসন মধ্য আফ্রিকার ভাষা ও সংস্কৃতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। পর্তুগীজদের আগমন এবং দাস ব্যবসা এই অঞ্চলের জীবনে কালো ছাপ রেখেছে। ১৮৮৪-৮৫ সালে বার্লিন সম্মেলনে ইউরোপীয় শক্তিগুলির মধ্যে আফ্রিকার বিভাজনের ফলে মধ্য আফ্রিকাও ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে চলে আসে। ১৯৬০ সালে বেশিরভাগ দেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
আধুনিক মধ্য আফ্রিকা: স্বাধীনতার পর মধ্য আফ্রিকার দেশগুলি রাজনৈতিক অস্থিরতা, অভ্যন্তরীণ সংঘাত, দারিদ্র্য এবং উন্নয়নের অভাবের সাথে লড়াই করে চলেছে। জঙ্গি সংগঠন এবং ইসলামী গোষ্ঠীর উত্থান এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে আরও হুমকির মুখে ফেলেছে। তবে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশা জাগ্রত করে।