মণিপুর: উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রমণীয় রাজ্য
মণিপুর, ভারতের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। ইম্ফল এর রাজধানী। নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, আসাম ও মিয়ানমার এর সীমান্তবর্তী রাজ্য। ২২,৩২৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই রাজ্যে মৈতেই জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ (৬০%)। তারা মূলত উপত্যকা অঞ্চলে বাস করে। মৈতেই ভাষা এখানকার প্রধান ভাষা।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
মণিপুরের ইতিহাস প্রাচীন ও রহস্যময়। মহাভারতের উল্লেখ অনুযায়ী, অর্জুনের সাথে গন্ধর্ব রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদার বিবাহের মাধ্যমে মণিপুরের ইতিহাসের সূচনা হয়। পরে ক্ষত্রিয় যোদ্ধারা এখানে বসতি স্থাপন করে। মৈতৈ জনগোষ্ঠী দশম-ত্রয়োদশ শতাব্দীতে চীন থেকে এখানে আসে। কাংলেইপাক রাজ্য হিসেবে পরিচিত রাজতন্ত্রের প্রথম রাজা ছিলেন পীতাম্বর চারাইরঙবা। ১৮২৪ সালে প্রথম অ্যাংলো-বর্মা যুদ্ধের পর মণিপুর ব্রিটিশদের অধীনে চলে আসে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করলেও, ১৯৪৯ সালে ভারতে যোগদান করে। ১৯৫৬ সালে কেন্দ্রশাসিত প্রদেশ হয় এবং ১৯৭২ সালে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পায়।
জনসংখ্যা ও সংস্কৃতি:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে মণিপুরের জনসংখ্যা ছিল ২,৮৫৫,৭৯৪। বিষ্ণুপ্রিয়া, মৈতৈ ও পাঙান প্রধান তিনটি গোষ্ঠী। মণিপুরের সংস্কৃতি উৎসব, নৃত্য, সঙ্গীত ও হস্তশিল্পে সমৃদ্ধ।
অর্থনীতি ও পর্যটন:
মণিপুরের অর্থনীতি কৃষি, বনজ সম্পদ ও হস্তশিল্পের উপর নির্ভরশীল। পর্যটন ক্ষেত্রেও এর বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। ইম্ফল বিমানবন্দর এবং খংসাং রেল স্টেশন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
উপসংহার:
মণিপুর তার ঐতিহাসিক গৌরব, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এটি একটি দ্রুত বিকাশমান রাজ্য, যার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।