ভিক্টর অরবান: হাঙ্গেরির দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী
ভিক্টর মিহাই অরবান (জন্ম: ৩১ মে, ১৯৬৩) হাঙ্গেরির একজন বিশিষ্ট ডানপন্থী রাজনীতিবিদ এবং দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী (২০১০ সাল থেকে)। তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্তও হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ফিদেজ-হাঙ্গেরিয়ান সিভিক ইউনিয়ন নামক মধ্য-ডানপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতা। ঠান্ডা যুদ্ধের পরবর্তীকালে পূর্ব ও মধ্য ইউরোপের এমন সরকার প্রধান তিনিই একমাত্র, যিনি কখনও সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক আমলের সদস্য ছিলেন না।
তার জন্ম সেকেসফেহারভারে, কিন্তু শৈশব কেটেছে আলকসাতদোবোজ ও ফেলকসাট গ্রামে। ১৯৮১ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে দুই বছর সামরিক সেবা দিয়ে ১৯৮৭ সালে বুদাপেস্টের ইয়তভোস লোর্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। সোরোস ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পেমব্রুক কলেজেও অধ্যয়ন করেছেন। রাজনীতিতে তার ব্যক্তিগত শিক্ষক ছিলেন জিগনিউ পেলসিনস্কি।
১৯৯০ সালে প্রথমবারের জন্য হাঙ্গেরির জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সাল থেকে ফিদেজ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসেন এবং ১৯৯৯ সালে ন্যাটোতে হাঙ্গেরির প্রবেশ নিশ্চিত করেন। ২০০২ সালে ক্ষমতা হারানোর পর ২০০৭ সালে পুনরায় ফিদেজের নেতৃত্ব গ্রহণ করে ২০০৯ সালে ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনে ৫৬.৩৬% ভোট পান। ২০১০ সালে তিনি পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হন এবং বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন।
আইনবিদ আনিকো লেভাইয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ অরবানের পাঁচটি সন্তান আছে। তিনি একজন ক্যালভিনিস্ট প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ফুটবলের প্রতি আগ্রহী।
অরবানের রাজনৈতিক কর্মজীবন এবং সরকার পরিচালনার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে তার জাতীয়তাবাদী ও ইউরোপ-বিরোধী নীতি এবং রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। অরবানের রাজনৈতিক দর্শন এবং ক্ষমতা অর্জন ও ধরে রাখার পদ্ধতি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশিত হয়। তার সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা রকমের দিক বিশ্লেষণ করা হয়।