শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগান: স্বাধীনতা যুদ্ধের এক অন্ধকার অধ্যায়
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগান, স্বাধীনতা যুদ্ধের এক অন্ধকার অধ্যায়ের সাক্ষী। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়, এই বাগান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়। অসংখ্য নিরীহ চা শ্রমিকদের এখানে হত্যা করা হয় এবং গণহত্যার ঘটনা ঘটে। এই নৃশংসতা বর্তমানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ দ্বারা চিহ্নিত।
১৯৭১ সালের ১লা মে, প্রায় ৫৫ জন চা শ্রমিককে কাজের প্রলোভনে ডেকে এনে এখানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর লাশগুলোকে একত্র করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। যুদ্ধের পর লোকজন এসে মাটি তুলে খুলি গণনা করে বধ্যভূমিটি চিহ্নিত করে। এই নৃশংসতার বর্ণনা বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণ ও প্রবীণ লেখক দীপেন্দ্র ভট্টাচার্যের লেখায় উঠে এসেছে। ১৯৯৭ সালে এখানে ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। তবে দুঃখের বিষয়, আজ এই স্থানটি বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হলেও, মুক্তিযুদ্ধের এই নৃশংস ইতিহাস অনেকের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে।
ভাড়াউড়া চা বাগানের বধ্যভূমি শ্রীমঙ্গলের অন্যান্য বধ্যভূমির মতোই সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভুগছে। এই বধ্যভূমি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্মৃতি রক্ষার জন্য জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া জরুরী। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই নৃশংস ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব।