ভাণ্ডারিয়া

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭:৫৬ এএম

ভাণ্ডারিয়া: পিরোজপুরের একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা

বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত পিরোজপুর জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা হল ভাণ্ডারিয়া উপজেলা। ১৯১২ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। প্রচুর পরিমাণে ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের কারণে প্রাচীনকালে একে 'শস্যের ভান্ডার' বলা হতো, যা থেকেই 'ভাণ্ডারিয়া' নামের উৎপত্তি বলে জনশ্রুতি আছে। আরেকটি জনশ্রুতি অনুসারে, একজন ভান্ডারি নামের দরবেশ ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে এ এলাকায় এসেছিলেন এবং তার নামানুসারেই এই স্থানের নামকরণ করা হয়। আবার এলাকাটি চন্দ্রদ্বীপ রাজার অধীনে ছিল এবং প্রচুর ফসল উৎপাদনের জন্য চন্দ্রদ্বীপের রাজারা একে 'শস্যের ভান্ডার' আখ্যায়িত করেছিলেন বলেও জানা যায়।

ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:

ভাণ্ডারিয়া উপজেলার আয়তন ১৬৩.৫৭ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে কাউখালী, দক্ষিণে মঠবাড়িয়া, পূর্বে ঝালকাঠির রাজাপুর ও কাঠালিয়া এবং পশ্চিমে কচা নদী এর সীমানা। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ১,৬৪,৬১৮ জন। পুরুষ ৮৩,৮১০ জন এবং মহিলা ৮০,৮০৮ জন। সাক্ষরতার হার প্রায় ৬৭.৭%।

ঐতিহাসিক ঘটনা:

১৮৫৪ সালে সিংখালীতে কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। গগন ও মোহন মিয়া নেতৃত্বে কৃষকরা ব্রিটিশ শাসন ও স্থানীয় জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, যার ফলে ১৭ জন বিদ্রোহী নিহত হন। মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালের আগস্টে সুবেদার আজিজ শিকদারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ভাণ্ডারিয়া থানা আক্রমণ করে এবং বেশ কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়। ২৯ নভেম্বর ভাণ্ডারিয়া বন্দর পদচ্যুত করার পরে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পশ্চাদপসরণ করে। উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় ভাণ্ডারিয়া প্রায়ই জলোচ্ছ্বাস এবং ঘূর্ণিঝড়ের শিকার হয়েছে।

অর্থনীতি ও উন্নয়ন:

ভাণ্ডারিয়ার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, পান, মরিচ, আখ, তিল, তিসি, আরহর, চীনা প্রভৃতি ফসল উৎপাদিত হয়। আম, নারকেল, সুপারি, পেয়ারা, কলা, চালতা, আমড়া প্রমুখ ফল উৎপাদন হয়। রাইস মিল, সিল মিল, আইস ফ্যাক্টরি, প্রিন্টিং প্রেস, ইটভাটা, ওয়েল্ডিং কারখানা সহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্মকাণ্ড রয়েছে। উপজেলায় ৫টি কলেজ, ১টি কারিগরী কলেজ, ৪১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮১টি মাদ্রাসা এবং ৩টি এতিমখানা রয়েছে। ভাণ্ডারিয়া বাজার, ইকরি বাজার, দশেরা, বৈশাখী ও পটলখালী মেলা এর উল্লেখযোগ্য।

উল্লেখ্য, উপজেলা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য এবং পরিসংখ্যান সংগ্রহ করে পরে আপডেট করা হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ভাণ্ডারিয়া উপজেলা পিরোজপুর জেলার অন্তর্গত।
  • ১৯১২ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
  • প্রচুর ফসল উৎপাদনের জন্য 'শস্যের ভান্ডার' নামে পরিচিত।
  • ১৮৫৪ সালে সিংখালী কৃষক বিদ্রোহ ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
  • কৃষি, কুটির শিল্প ও ছোটো ব্যবসায় অর্থনীতি নির্ভর।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ভাণ্ডারিয়া