ভাঙ্গা উপজেলা, ফরিদপুর জেলার একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি ফরিদপুর সদর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। কুমার নদীর তীরে অবস্থিত এই উপজেলার নামকরণের পেছনে দুটি প্রধান মতবাদ রয়েছে: এক, কুমার নদীর উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের লোকজনের মধ্যে হাটকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের ফলে হাটটি ভেঙে দক্ষিণ পাড়ে স্থানান্তরিত হয়, যার ফলে 'ভাঙ্গা হাট' নামের উৎপত্তি হয়; দুই, ব্রিটিশ আমলে দেওড়া নামক স্থানে অবস্থিত থানাটি ভেঙে বর্তমান ভাঙ্গা সদরে স্থানান্তরিত হয়, যা বর্তমান নামকরণের পেছনে কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ভাঙ্গা উপজেলার উত্তরে সদরপুর ও নগরকান্দা, দক্ষিণে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর ও মাদারীপুরের রাজৈর, পূর্বে মাদারীপুরের শিবচর ও সদরপুর, এবং পশ্চিমে নগরকান্দা উপজেলা অবস্থিত। এই উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন, ১৩৬টি মৌজা এবং ২২৭টি গ্রাম রয়েছে।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ২,৫৯,০৩২ জন, যার মধ্যে পুরুষ ১,২৫,৩২৪ জন এবং মহিলা ১,৩৩,৭০৮ জন। ধর্মীয় জনসংখ্যা প্রায়: মুসলিম ৯০.৩৫%, হিন্দু ৯.৫২%, এবং অন্যান্য ০.১৩%। উপজেলায় ৪০৬টি মসজিদ, ৪২টি মন্দির, এবং ১টি তীর্থস্থান (খাটরা) রয়েছে। এছাড়াও কুমার নদী, আড়িয়াল খাঁ নদী ও পুরানো কুমার নদী উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত।
শিক্ষার দিক থেকে, উপজেলার শিক্ষার হার প্রায় ৬৫%। এখানে ৪টি কলেজ, ৩০টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২টি জুনিয়র হাই স্কুল, ১টি বালিকা বিদ্যালয়, ৭৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩টি মাদ্রাসা এবং ৪টি এতিমখানা রয়েছে। কৃষিকাজ এই উপজেলার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। মালিকগ্রামের পাটের ও গরুর হাট সারা বাংলাদেশে খ্যাত।