১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের পর থেকেই ব্রিটিশ সাহেবদের আগমন এবং তাদের শাসনের সূচনা হয় বাংলায়। ভাগ্যের পরিবর্তনের আশায় অনেক ব্রিটিশ সাহেব এদেশে আসেন, তাদের অনেকেই নীলের ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খালিশপুরে অবস্থিত একটি নীলকুঠি ব্রিটিশ শাসনের এক মর্মান্তিক স্মৃতিচিহ্ন। কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত এই কুঠিটি ১৪ একর জমির উপর নির্মিত হয়েছিল এবং ব্রিটিশ সাহেব মিস্টার ডেভরেল এখান থেকে পূর্ব বাংলার নীল চাষ পরিচালনা করতেন। এই কুঠিটিতে কৃষকদের নির্যাতন করা হতো। ১৮১০ থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশরা এখানে নীল চাষ করত। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর নীলকুঠির মালিক জমিদার দেশ ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে সরকার জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করলে কুঠিটি সরকারি মালিকানায় চলে আসে। ঝিনাইদহ-যশোরে ৬৭টি নীলকুঠি ছিল, অনেকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। কৃত্রিম নীল আবিষ্কারের পর নীল ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয় এবং ব্রিটিশরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে থাকে। খালিশপুর নীলকুঠি নীল চাষের শেষদিকে স্থাপিত হয়েছিল এবং পরে এক জমিদারের কাছে বিক্রি হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ওই জমিদারও দেশ ত্যাগ করেন। ১৯৫৬-৫৭ এবং ১৯৮৩-৮৪ সালে এটি মহাকুমা সিও অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং ১৯৮৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজকর্ম চলত। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
ব্রিটিশ সাহেব
মূল তথ্যাবলী:
- পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ সাহেবদের আগমন
- ঝিনাইদহের খালিশপুর নীলকুঠি: ব্রিটিশ শাসনের এক স্মৃতিচিহ্ন
- নীল চাষ ও কৃষক নির্যাতন
- ১৮১০-১৮৫৮ সাল পর্যন্ত নীল চাষ
- ১৯৪৭ সালে দেশভাগ এবং জমিদারদের প্রস্থান
- কৃত্রিম নীল আবিষ্কারের পর নীল ব্যবসার অবনতি