বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার অভিনব দিগন্ত
বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার দ্রুত বর্ধনশীল চাহিদা পূরণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা অপরিসীম। ১৯৯২ সালে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাসের মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু হলেও ২০১০ সালে আইন সংশোধনের মাধ্যমে আরও সুশাসন ও মান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে, দেশে অসংখ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যা বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদান করে।
প্রাথমিক পর্যায়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশে কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল, যেমন অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, মানবসম্পদ সংকট ইত্যাদি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নত অবকাঠামো, যোগ্য শিক্ষক এবং আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এর মাধ্যমে ট্রাস্টি বোর্ড, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কমিটি, কারিকুলাম কমিটি, অর্থ কমিটি, শিক্ষক নিয়োগ কমিটি ও শৃঙ্খলা কমিটির মতো কয়েকটি সংবিধিবদ্ধ কমিটি গঠনের মাধ্যমে সুশাসন ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এই প্রতিষ্ঠানগুলির কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে এবং শিক্ষার মান নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সাধারণত আমেরিকান শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করে এবং বাজারের চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন কোর্স অফার করে। তবে, শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ ও মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদানের বিষয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে, বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে। তবে, শিক্ষার মান বজায় রাখা, সুশাসন নিশ্চিত করা এবং সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য অধ্যয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালে ৯৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, এবং বার্ষিক ভর্তি পরীক্ষা অনুসারে, শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, কিছু নিম্নমানের প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বও লক্ষণীয়।
[হাফিজ জিএ সিদ্দিকী]