সৈয়দ গাজী বুরহানউদ্দীন: সিলেটের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব
সৈয়দ গাজী বুরহানউদ্দীন (আরবি: سيد غازي برهان الدين) ছিলেন একজন ওলি, যিনি ১৪ শতকে সিলেটে বসবাস করতেন। জনশ্রুতি অনুযায়ী, তিনি সিলেটে প্রথম মুসলিম বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তুলটিকর মহল্লার ১৩টি মুসলিম পরিবারের সরদার ছিলেন বুরহানউদ্দীন। এই পরিবারগুলোর পূর্বপুরুষরা বিন কাসিমের সিন্ধু বিজয়ের পর জাহাজে করে চট্টগ্রামে আগমন করেছিলেন এবং পরে দাওয়াতী ও ব্যবসায়িক কারণে সিলেটে বসতি স্থাপন করেন। এই ১৩টি পরিবারের বসতি এখনও 'তেররতন' নামে পরিচিত।
বুরহানউদ্দীনের পুত্রের আকিকা উপলক্ষে একটি গরু জবাই করার ঘটনায় সিলেটের তৎকালীন রাজা গৌড় গোবিন্দ ক্ষুব্ধ হন। রাজার নির্দেশে বুরহানউদ্দীনের পুত্র সৈয়দ গুলজার আলমকে হত্যা করা হয় এবং বুরহানউদ্দীনের ডান হাত কেটে ফেলা হয়। এই অবিচারের বিরুদ্ধে বুরহানউদ্দীন লখনৌতির সুলতান শামসউদ্দিন ফিরোজ শাহের কাছে সাহায্য চান। সুলতানের নির্দেশে সিলেট জয়ের জন্য একটি সেনাবাহিনী পাঠানো হয়, এবং বুরহানউদ্দীন ছিলেন সেই সেনাবাহিনীর পথ প্রদর্শক। শাহজালাল ও ৩৬০ আউলিয়ার সহযোগিতায় ১৩০৩ সালে সিলেট অধিকার করা হয়।
জীবনের শেষ পর্যন্ত বুরহানউদ্দীন একজন ওলি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সিলেটের টুলটিকর মহল্লার কুশিঘাটে তার মাযার অবস্থিত। তার স্মৃতিরক্ষার্থে সিলেটে সৈয়দ বুরহানউদ্দিন রাস্তা, গাজী বুরহান উদ্দীন প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হাদীস শাহ গাজী সৈয়দ বুরহান উদ্দীন মাদ্রাসা স্থাপিত হয়েছে। লন্ডনেও তার নামে বুরহান উদ্দিন হাউস ও বুরহান উদ্দীন মসজিদ রয়েছে।