বিহা শব্দটি বহু অর্থে ব্যবহৃত হয় এবং এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গভেদে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, এটি বিয়ে বা বিবাহ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, তবে প্রাচীন স্থাপত্যের সাথেও এর সম্পর্ক রয়েছে।
বিহা (বিবাহের অর্থে):
বাংলা ভাষায় বিহা শব্দটি সংস্কৃতের "বিবাহ" (vivāha) থেকে উৎপত্তি। এটি প্রধানত বরেন্দ্র অঞ্চলে ব্যবহৃত হয় এবং বিয়ের প্রক্রিয়া বা অনুষ্ঠানকে নির্দেশ করে। অন্যান্য অঞ্চলে "বিয়ে" বা "বিয়া" শব্দটি বেশি প্রচলিত। এর অন্যান্য উচ্চারণ হল বিয়্যা, বিয়া, এবং হিন্দি প্রভাবের কারণে শাদী। এটি বিবাহ শব্দের একটি প্রতিশব্দ ও প্রকৃতপক্ষে ঐতিহাসিক উৎপত্তিতে ভিন্নতার কারণে বিবাহের জুড়ি রূপে গণ্য হয়।
বিহা (বৌদ্ধ স্থাপত্যের অর্থে):
এই অর্থে বিহা বোঝায় বৌদ্ধ বিহার। বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলিতে এই শব্দটি প্রচুর ব্যবহৃত হয়। শালবন বিহার কুমিল্লার ময়নামতিতে অবস্থিত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। এটি দেববংশের রাজা শ্রীভবদেবের অনুমানিত সময়ে নির্মিত। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর শেষ থেকে অষ্টম শতাব্দীর প্রথম ভাগে এটি নির্মিত হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। এটি একটি বৃহৎ চৌকো আকৃতির বিহার যা ১৬৭.৭ মিটার দীর্ঘ প্রতিটি বাহু নিয়ে নির্মিত। বিহারে ১১৫টি কক্ষ ছিল যেখানে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা থাকতেন। প্রত্নতাত্ত্বিক খননে বিভিন্ন তাম্রলিপি, মুদ্রা, মূর্তি এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক সামগ্রী এখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ময়নামতির শালবন বিহার বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর ঐতিহাসিক ও গঠন বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান প্রত্নতাত্ত্বিক খনন এবং গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়েছে।