বিজয়নগর নামটি দ্ব্যর্থবোধক হতে পারে, কারণ এটি একাধিক স্থান ও ঘটনার সাথে সম্পর্কিত। এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলা এবং ভারতের একটি ঐতিহাসিক সাম্রাজ্য বিজয়নগর সাম্রাজ্যের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো।
বাংলাদেশের বিজয়নগর উপজেলা:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা হল বিজয়নগর উপজেলা। এর আয়তন ২২১.১৭ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে সরাইল ও মাধবপুর, দক্ষিণে আখাউড়া, পূর্বে ত্রিপুরার আগরতলা এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা অবস্থিত। ব্রিটিশ আমলে ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে এ উপজেলার যোগাযোগ ছিল। সিংগারবিলের সাথে ত্রিপুরার ১৫০ বছরের পুরোনো সড়ক এখনো ব্যবহারযোগ্য। লালমাটি সমৃদ্ধ মুকুন্দপুর, বিষ্ণুপুর ও সিংগারবিল ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। কালাছড়া চা বাগানে অজানা শহীদদের গণকবর রয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এখানে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ হয়েছিল। ১৯ নভেম্বর ১৯৭১ সালে মুকুন্দপুর এলাকা মুক্ত হয়, যা প্রতিবছর মুকুন্দপুর দিবস হিসেবে পালিত হয়। স্বাধীনতার পতাকা এই ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। ২০১০ সালে বিজয় দিবস উপলক্ষে এর নামকরণ করা হয় বিজয়নগর। উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন ও বিজয়নগর থানা রয়েছে। ২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ২,৫৭,২৪৭ জন। সাক্ষরতার হার ৯৮%। দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
ভারতের বিজয়নগর সাম্রাজ্য:
দক্ষিণ ভারতের একটি মধ্যযুগীয় সাম্রাজ্য ছিল বিজয়নগর সাম্রাজ্য (১৩৩৬-১৬৪৬ খ্রিস্টাব্দ)। ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে হরিহর ও বুক্কা রায় এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৫৬৫ সালে তালিকোটার যুদ্ধে পরাজয়ের পর এটির পতন শুরু হয়। এর রাজধানী ছিল বিজয়নগর (বর্তমান হাম্পি), যা বর্তমানে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থল। পর্তুগীজরা একে বিসনাগা রাজ্য বলে উল্লেখ করেছিল। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের শাসকগণ, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, স্থাপত্যশিল্প, অর্থনীতি, এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য ঐতিহাসিক গ্রন্থ ও গবেষণা পত্র অধ্যয়ন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।