বাছুর শব্দটি সংস্কৃত 'वत्सरूप' (vatsarupa) থেকে উৎপত্তি হয়েছে, যার অর্থ 'বাছুর আকৃতির'। বাংলায় এটি 'বাছুর' রূপে প্রচলিত। বাছুর বলতে গরুর ছানাকে বোঝায়। এটি গরুপালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাছুরের সঠিক যত্ন ও পুষ্টি গরুর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাছুরের খাদ্য: বাছুরের খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা বয়সের সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। জন্মের পর প্রথম ২৪ ঘন্টায় মায়ের শাল দুধ খাওয়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরপর ক্রমান্বয়ে কাঁচা ঘাস, দানাদার খাবার ও পানি সরবরাহ করতে হয়। ১ মাস বয়সে কাঁচা ঘাস ও দানাদার খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়। ২ মাস বয়সে দৈনিক ২৫০-৫০০ গ্রাম দানাদার খাদ্য ও আঁশ জাতীয় খাবার, ৪ মাসে ৭৫০ গ্রাম, ৬-৯ মাসে ১ কেজি এবং ১ বছর বয়সে দৈনিক ১.৫ কেজি দানাদার খাদ্য প্রয়োজন। কাঁচা ঘাসের পরিমাণ দৈনিক ৬-৮ কেজি পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে। দানাদার খাদ্যে আমিষ ২০% ও আঁশ ১০% এর কম রাখা উচিত।
বাছুরের যত্ন: বাছুরের সুস্থতা ও বৃদ্ধির জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শুষ্ক বাসস্থান অপরিহার্য। বাছুরকে রোগমুক্ত রাখার জন্য তাদের আলাদা আলাদা ঘরে রাখা উচিত। সঠিকভাবে নাভীর যত্ন নেওয়া ও প্রয়োজনীয় টিকা প্রয়োগ করাও গুরুত্বপূর্ণ। বাছুরের সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বাছুরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব: বাছুর গরুপালনে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি দুধ উৎপাদন, মাংস উৎপাদন এবং কৃষিকাজে ব্যবহার করা যায়। সুস্থ ও উন্নত জাতের বাছুর পালনের মাধ্যমে গরুপালন ব্যবসা লাভজনক করা সম্ভব।