বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই): আখ ও অন্যান্য মিষ্টি ফসলের গবেষণার অগ্রদূত
বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট (পূর্বে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট) একটি স্বায়ত্তশাসিত জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান যা আখ চাষাবাদ ও অন্যান্য মিষ্টি ফসলের গবেষণা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার অরণকোলা ও বহরপুর মৌজায় ২৩৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই ইনস্টিটিউটটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ।
ইনস্টিটিউটের ইতিহাস:
১৯১২ সালে ব্রিটিশ ভারতের কোয়েম্বাটোরে ইক্ষু প্রজনন কেন্দ্র স্থাপিত হয়। ১৯৩৩ সালে ঢাকার মনিপুরী খামারে ইক্ষু চাষাবাদের উপর গবেষণা শুরু হয়। ১৯৫১ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকার পাবনায় ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৭৩ সালে স্বাধীনতার পর ইনস্টিটিউটটি বাংলাদেশ চিনিকল সংস্থার অধীনে চলে আসে। ১৯৭৪ সালে ‘ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামে একটি প্রকল্প গৃহীত হয়। ১৯৮৯ সালে এটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আসে এবং দেশব্যাপী আখ গবেষণার পাশাপাশি খেজুর, তালসহ অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় ফসলের উপর গবেষণার দায়িত্ব পায়। ১৯৯৬ সালে ‘বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইন পাশ হয়। ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট’ করা হয়। ২০১৯ সালে তাল, খেজুর, গোলপাতা প্রভৃতি চিনিজাতীয় শস্য গবেষণা অন্তর্ভুক্ত হয়।
গবেষণার ক্ষেত্র:
বিএসআরআই উন্নত জাতের আখ উৎপাদন, রোগবালাই প্রতিরোধ, উৎপাদন বৃদ্ধি, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির প্রয়োগ, ইক্ষুর বহুমুখী ব্যবহার (চিনি, গুড়, ইত্যাদি) এবং অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় ফসলের গবেষণা ও উন্নয়ন কাজ করে।
অবদান:
বিএসআরআই দেশের চিনি উৎপাদন বৃদ্ধি, চাষীদের জীবিকা উন্নয়ন, এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সাম্প্রতিক উদ্যোগ:
বিএসআরআই বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আখ চাষাবাদকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ, এবং উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করে থাকে।