ফেনীর দাগনভূঞা: ইতিহাস, ভূগোল ও বর্তমান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হল দাগনভূঞা। ১৬৫.৮৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলাটি ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের (এন ১০৪) উপর অবস্থিত এবং এর অবস্থান ২২°৫৩´ থেকে ২৩°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৫´ থেকে ৯১°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। ফেনী জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার।
ইতিহাস: দাগনভূঞার পূর্ব নাম ছিল গোপীগঞ্জ, যা ভুলুয়া রাজ্যের অধীনে শাসিত হত। ঐতিহাসিক সূত্র অনুযায়ী, মুঘল সম্রাট শাহাজাহানের পুত্র শাহাজাদা সুজার আমলে বার ভূঁইয়াদের একজন ‘দাগন ভূঁইয়া’ নামে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এখানে বসতি স্থাপন করেন। তার নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ হয় দাগনভূঞা। ১৮৭৬ সালে ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে বৃহত্তর নোয়াখালীর অংশ হিসেবে ফেনী মহকুমার অন্তর্গত থানা হিসেবে দাগনভূঞা গঠিত হয়। ১৯৭৯ সালে এটি থানা হিসেবে গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে উপজেলায় উন্নীত হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা: দাগনভূঞা উপজেলার উত্তরে কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা এবং ফেনী সদর উপজেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলা এবং পশ্চিমে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলা অবস্থিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, দাগনভূঞার জনসংখ্যা ছিল ২,২৫,৪৬৪ জন। এই উপজেলা ফেনী নদী দ্বারা সিঞ্চিত।
প্রশাসনিক বিভাগ: বর্তমানে দাগনভূঞা উপজেলায় ১টি পৌরসভা এবং ৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ১৫২টি গ্রাম ও ১০০টি মৌজা।
অর্থনীতি ও সামাজিক অবস্থা: দাগনভূঞার অর্থনীতি মূলত কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও, হাট-বাজার, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অন্যান্য কিছু ক্ষুদ্র উদ্যোগ এখানে কাজ করে। সাক্ষরতার হার ৫৫.৪৮%। স্বাস্থ্য সেবার জন্য একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র আছে। যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়ক।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ: দাগনভূঞা থেকে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি জাতীয় জীবনে অবদান রেখেছেন। তবে, প্রদত্ত তথ্য থেকে এদের বিস্তারিত তালিকা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে আরও তথ্য প্রাপ্তির সাথে সাথে আপনাকে এই বিষয়ে আপডেট করা হবে।