প্রশান্ত কর্মকার: একজন অসাধারণ প্যারা-সাঁতারু
প্রশান্ত কর্মকার (জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯৮০, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ) ভারতের একজন বিখ্যাত প্যারা-সাঁতারু এবং প্রথম ভারতীয় প্যারালিম্পিয়ান। সাত বছর বয়সে এক দুর্ঘটনায় ডান হাত হারানোর পরও তিনি অদম্য সাহস ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সাঁতারে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন। তার অর্জনের তালিকা বিশাল: অর্জুন পুরস্কার, ভীম পুরস্কার, কলকাতা শ্রী পুরস্কার, মেজর ধ্যান চাঁদ পুরস্কার, রাজ্য রোল মডেল পুরস্কার, সুপার আইডল পুরস্কার, ইতিবাচক স্বাস্থ্য হিরো পুরস্কার এবং লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে স্থান লাভ।
২০০৩ সালে আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি প্রথম ভারতীয় প্যারা-সাঁতারু হিসেবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন। বাটারফ্লাই, ব্রেস্টস্ট্রোক এবং ব্যাকস্ট্রোক-এ তিনি এশিয়ান রেকর্ডধারী। ১৬ বছর ধরে তিনি জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। ২০০৯ সালে ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত আই ডাবলু এ এস ওয়ার্ল্ড গেমসে তিনি ৪টি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্য এবং ১টি ব্রোঞ্জ পদক জিতে সর্বাধিক সফল ভারতীয় সাঁতারু হিসেবে নিজের নাম করে রাখেন। ২০১০ সালের গুয়াংঝু এশীয় প্যারা গেমসে এবং বার্লিনের আন্তর্জাতিক জার্মান সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপেও তিনি পদক জয় করেন। ২০১৪ সালের ইঞ্চিওন এশিয়ান প্যারা গেমসে তিনি আরও দুটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। ২০১০ সালের দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসে তিনি অ্যাকোয়াটিক বিভাগে ভারতের প্রথম পদক জয় করেন।
২০১৬ রিও অলিম্পিকে তিনি ভারতীয় দলের প্রশিক্ষক ছিলেন। অর্থাভাব ও অন্যান্য কারণে ২০১২ লন্ডন প্যারালিম্পিক্সে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরবর্তীতে তিনি সাইকেলিংয়েও সফলতা অর্জন করেন এবং এশিয়ান প্যারা সাইকেল চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণ পদক জয় করেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় ভলিবল ও টেবিল টেনিস দলেও খেলেছেন।
২০১৮ সালে, জয়পুরে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে মহিলা প্রতিযোগীদের ভিডিও রেকর্ডিংয়ের অভিযোগে ভারতীয় প্যারালিম্পিক কমিটি তাকে তিন বছরের জন্য নির্বাসিত করে। তিনি এই স্থগিতাদেশকে দিল্লি হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তার জীবনী এক অসাধারণ প্রেরণার উৎস।