বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তর: একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ
বাংলাদেশ পুলিশ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কার্যরত, দেশের প্রধান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। এই সংস্থার কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে। ঢাকার ফুলবাড়িয়া, ৬ ফিনিক্স রোডে অবস্থিত এই সদর দপ্তর বাংলাদেশ পুলিশের 'নার্ভ সেন্টার' হিসেবে কাজ করে।
ইতিহাস:
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে পূর্ব পাকিস্তান পুলিশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। ২৫শে মার্চ ১৯৭১ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর 'অপারেশন সার্চলাইট'-এর প্রথম আঘাত পড়েছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে। মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ১৩,০০০ পুলিশ সদস্য স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
১৯৮৬ সালে পুলিশ সদর দপ্তরের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে একটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালের ৮ই জুন ৪তলা বিশিষ্ট ভবনটি উদ্বোধন করা হয়। বর্ধিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২০তলা বিশিষ্ট একটি নতুন ভবন 'জাতীয় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপারেশন নিরীক্ষণ কেন্দ্র' (NCCOM) ২০০৯ সালে নির্মাণ শুরু হয় এবং ২০১৩ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধন করা হয়।
কার্যক্রম:
পুলিশ সদর দপ্তর দেশের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে কাজ করে। এই বিভাগগুলোর মধ্যে আছে প্রশাসন, অপারেশন, অপরাধ ব্যবস্থাপনা, অর্থ ও বাজেট, শৃঙ্খলা ও পেশাদারী মান, সমাজ পুলিশিং, প্রতিষ্ঠান, এনসিবি, আইসিটি ও টেলিকম, কল্যাণ ও পেনশন, প্রশিক্ষণ ও খেলাধুলা, এস্টেট ও রাজস্ব, উন্নয়ন, লজিস্টিকস, সরঞ্জাম, এমটি ও পিএলও, পরিকল্পনা ও গবেষণা, জাতিসংঘ ডেস্ক, ভর্তি মানব শক্তি ও প্রশিক্ষণ, মিডিয়া ও জনসংযোগ, আইনি কোষ ইত্যাদি। আইজিপি এই সকল বিভাগের কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয়:
- পুলিশ সদর দপ্তর বাংলাদেশ পুলিশের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কাজ করে।
- সদর দপ্তরে বিভিন্ন বিভাগ এবং শাখা অবস্থিত যারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কাজ করে।
- মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল।
- সদর দপ্তরের নতুন ভবন NCCOM আধুনিক প্রযুক্তি ও সুযোগ-সুবিধা সমন্বিত।
সারসংক্ষেপে:
বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তর দেশের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি বাংলাদেশ পুলিশের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ে এটির উল্লেখযোগ্য অবদান থাকে।