যশোরের চৌগাছা থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পায়েল হোসেনের নামে গত দেড় মাসে নানা অভিযোগের পাহাড় জমেছে। তার বিরুদ্ধে টর্চার সেল পরিচালনা, রিমান্ড বাণিজ্য, ঘুষ বাণিজ্য, অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি, নারী কেলেঙ্কারি, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ নানা অভিযোগ উঠেছে। শেষ পর্যন্ত একটি অশালীন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তাকে চৌগাছা থানার ওসি পদ থেকে ক্লোজড করা হয় এবং তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
পায়েল হোসেন চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর ঢাকার রমনা থানা থেকে বদলি হয়ে চৌগাছা থানায় যোগদান করেন। ওসি হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তিনি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। চৌগাছা বাস মালিক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিনের কাছে এক কোটি টাকা দাবি করেন, টাকা না দেওয়ায় তাকে বাড়িতে সারারাত অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।
উপজেলার ভাদড়া গ্রামের বিএনপি নেতা ব্যবসায়ী মানিক হোসেন, মাশিলা গ্রামের যুবক পারভেজ আহমেদ সোহাগ, এবং সিংহঝুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হামিদ মল্লিকের উপরও তিনি শারীরিক নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জড়িত ছিলেন। এছাড়াও, ব্যবসায়ী জীবন হোসেন লিপু এবং তার বন্ধু বাবুলের কাছে টাকা দাবি করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে “দালাল” লেখা পোস্টার লাগিয়ে হুমকি দেন।
২৮ ডিসেম্বর, একজন ডিভোর্সি নারীর সাথে অশালীন অঙ্গভঙ্গিতে কথা বলা ও শরীরের গোপনাঙ্গ প্রদর্শনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। পায়েল হোসেন এই অভিযোগগুলি অস্বীকার করে ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন। তবে যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এই ঘটনাটি পুলিশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেছে বলে বিবেচিত হচ্ছে।