পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২১ পিএম

সৈয়দ শামসুল হকের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ কাব্যনাটকটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত। তবে এটি মুক্তিযুদ্ধের কোনো নির্দিষ্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত নয়, বরং যুদ্ধের আবহে গ্রামীণ বাংলার মানুষের জীবন, তাদের আশা-আশঙ্কা, দ্বন্দ্ব, এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের অবস্থান তুলে ধরে।

নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র মাতবর, একজন গ্রাম প্রধান, যিনি পাকিস্তানী হানাদারদের দোসর। গ্রামবাসীরা বিপদের সময় আশ্রয়ের জন্য তার কাছে আসে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের জয়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে মাতবরের দ্বৈত চরিত্র উন্মোচিত হয়। তিনি পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে মিলে গ্রামবাসীকে প্রতারিত করেছেন এবং তার মেয়েকেও পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের কাছে তুলে দিয়েছেন। এই ঘটনায় মাতবরের মেয়ে আত্মহত্যা করে। পরে মুক্তিযোদ্ধারা মাতবরকে হত্যা করে।

নাটকে মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতা, সামাজিক বৈষম্য, ধর্মীয় কুসংস্কার, এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তির চিত্র স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। গ্রামীণ বাংলার উপভাষার ব্যবহার, কাব্যিক ভাষা, এবং ছন্দোবদ্ধ সংলাপ নাটকটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ‘পায়ের আওয়াজ’ মুক্তিযুদ্ধের আওয়াজের প্রতীক, যা মাতবরের ভ্রান্ত ধারণার ধ্বংসেরও ইঙ্গিত করে।

‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ কাব্যনাটক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে তৈরি হলেও, তার মূল বিষয় হলো মানুষের মুক্তির সংগ্রাম, এবং ধর্ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব। এটি বাংলাদেশের নাট্য সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় কাজ।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত কাব্যনাটক
  • মুক্তিযুদ্ধের আবহে গ্রামীণ বাংলার মানুষের জীবন ও দ্বন্দ্ব তুলে ধরে
  • মাতবর নামক পাকিস্তানি দোসরের দ্বৈত চরিত্র উন্মোচিত হয়
  • মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতা, সামাজিক বৈষম্য ও কুসংস্কার তুলে ধরা হয়েছে
  • ‘পায়ের আওয়াজ’ মুক্তিযুদ্ধের আওয়াজ ও ভ্রান্ত ধারণার ধ্বংসের প্রতীক

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়

‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ নাটকটির ২১০তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়।