বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বোর্ড ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে দেশের প্রায় ৩ কোটি গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা প্রদান করে। প্রাথমিকভাবে ১৯৭৮ সালে কার্যক্রম শুরু করে বিআরইবি। ২০১৩ সালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড অধ্যাদেশ রহিত করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আইন, ২০১৩ জারি করা হয়। বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল আজিম।
বিআরইবি মূলত গ্রামীণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ লাইন ও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ করে। নির্মিত অবকাঠামো ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই সমিতিগুলি গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করে, মিটার সংযোগ দেয়, বিদ্যুৎ লাইন ও উপকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ করে। বিআরইবি আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালিত হয়, তবে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুসরণ করে। বিআরইবির কর্মকর্তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, যখন সমিতির কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নিজস্ব পে-স্কেলে বেতন পায়।
গ্রাহক সেবা উন্নয়নে বিআরইবি বিভিন্ন আইসিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রি-পেইড/স্মার্ট মিটার স্থাপন, অনলাইনে প্রি-পেইড টোকেন ক্রয় ও বিদ্যুৎ বিল প্রদানের সুবিধা, অনলাইনে বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন, এসএমএস এর মাধ্যমে বিলের তথ্য প্রদান, ইন্ট্রিগ্রেটেড সেন্ট্রালাইজড বিলিং সিস্টেম (ICBS), এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ERP), মোবাইল অ্যাপ, ই-নথি, ডিজিটাল ফোনবুক, অনলাইন অভিযোগ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম এবং আরও অনেক। গ্রাহকরা বিকাশ, রকেট, গ্রামীণফোন পে, রবিক্যাশ, ইউক্যাশ, শিওরক্যাশ এবং মাইক্যাশ এর মাধ্যমে অনলাইনে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন।
বিআরইবির প্রধান কার্যালয় ঢাকায় অবস্থিত। সংস্থাটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং গ্রামকে শহরের সাথে সমান্তরালে নিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য অনলাইনে আবেদন করার ব্যবস্থাও বিআরইবি করেছে।