বরিশালের ঐতিহাসিক পদ্মপুকুর: সৌন্দর্য্য ও সংরক্ষণ
বরিশাল নগরীর বান্দরোড সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএ নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের ‘হীম নীড়’ চত্ত্বরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পদ্মপুকুর। গত কয়েক বছর ধরে এর সৌন্দর্য কিছুটা হ্রাস পেলেও, সম্প্রতি পুকুরে কিছু শ্বেতপদ্ম ফুটেছে, যা দর্শনার্থীদের মনে আনন্দের ঝড় তুলেছে। তবে, এই ঐতিহ্যবাহী পদ্মপুকুরের যথাযথ যত্নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও আন্তরিক প্রয়াসের প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকে।
২০১৭ সালে পদ্মপুকুর পরিদর্শন করে বিআইডব্লিউটিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান ও মরিশাসের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত আবদুল মান্নান হাওলাদার এটিকে দেশ-বিদেশে বিরল বলে অভিহিত করেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, গোলাপী পদ্ম অহরহ দেখা গেলেও, একই জলাশয়ে এত সাদা পদ্ম ফুল বিরল।
গত তিন বছর আগে আগাছা পরিষ্কারের নামে কর্তৃপক্ষ পদ্মগাছ কেটে ফেলেছিল, যা নিয়ে নাগরিক সমাজের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ছিল। তবে, কাটা গাছের কান্ড থেকে কিছু নতুন গাছ গজিয়ে উঠেছে এবং বর্তমানে বেশ কিছু শ্বেতপদ্ম ফুটেছে। এছাড়াও, পুকুরের পশ্চিম-উত্তর পাশে একটি ছাউনিযুক্ত অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে যা পুকুরটিকে আরও পর্যটনবান্ধব করে তুলেছে।
প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী পদ্মপুকুরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। তবে, নিরাপত্তা দেয়ালে ঘেরা থাকায় তারা পুকুরের কাছে যেতে পারেন না। দর্শনার্থীদের জন্য পুকুরটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি উঠেছে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের সাবেক চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার দাস জানান, এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত শ্বেতপদ্ম পাওয়া যায়। এটি ভাসমান জলজ উদ্ভিদ এবং ঔষধি গুণ সম্পন্ন।
বিআইডব্লিউটিএ’র সিনিয়র ড্রাফট্সম্যান একেএম মনিরুজ্জামান জানান, ব্রিটিশ আমলে পুকুরটির স্থানে স্টিমার কোম্পানীর কার্যালয় ছিল। ১৯৬৫ সালে একজন জার্মান নাগরিক কিছু শ্বেতপদ্ম রোপণ করেছিলেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন-উর রশীদ পুকুরের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি পুকুরটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে সন্দিহান।
উল্লেখ্য, পদ্মপুকুরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরী।