নিরীক্ষা

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩:৩৫ এএম

বাংলাদেশে নিরীক্ষা (অডিটিং) : একটি ব্যাপক বিশ্লেষণ

নিরীক্ষা বা অডিটিং হলো আর্থিক কার্যক্রম ও ঘটনাবলীর নিয়মানুগ ও নিরপেক্ষ মূল্যায়ন। এর মূল লক্ষ্য হলো বিদ্যমান নীতিমালা ও সম্পাদিত কাজের মধ্যে সঙ্গতি নিশ্চিত করা। নিরীক্ষার মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণী ও অন্যান্য তথ্য পরীক্ষা করা হয় এবং এর ফলাফল বিশেষ মতামত হিসেবে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে দেওয়া হয়।

১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুসারে, বাংলাদেশে নিবন্ধিত কোম্পানির হিসাব নিরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। ২১৩(৩) ধারা অনুযায়ী, নিরীক্ষককে বার্ষিক সাধারণ সভায় পরীক্ষিত হিসাব সম্পর্কিত মতামত দিতে হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস (ICAB) আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা মান অনুসরণ করে।

নিরীক্ষা পেশাটি ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন, ১৯৯১ সালের ব্যাংকিং কোম্পানি আইন, ১৯৩৮ সালের বীমা আইন, ১৯৯৩ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৮৭ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৭৮ সালের বৈদেশিক অনুদান নিয়ন্ত্রণ রুলস এবং ১৯৮৪ সালের কো-অপারেটিভ সোসাইটি অধ্যাদেশসহ বিভিন্ন আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অর্ডার ১৯৭৩ অনুসারে চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টদের দ্বারা নিরীক্ষা করাতে হয়। এনজিও এবং কো-অপারেটিভ সোসাইটির হিসাবপত্রও চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টদের দ্বারা নিরীক্ষা করা হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত কর্পোরেশনের নিরীক্ষা তিন স্তরে করা হয়: অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ, স্বাধীন পেশাজীবী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল (CAG)।

সরকারি নিরীক্ষার উদ্দেশ্য হলো সরকারি ব্যবস্থাপনায় সম্পদের ব্যবহারের স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব নিশ্চিত করা। CAG বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৮ ধারা অনুযায়ী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের হিসাব নিরীক্ষার দায়িত্ব পালন করে। CAG এর অধীনে বিভিন্ন অডিট ডাইরেক্টরেট রয়েছে, যেমন- বাণিজ্যিক নিরীক্ষা, পূর্ত নিরীক্ষা, বৈদেশিক সাহায্য প্রকল্প নিরীক্ষা, বেসামরিক নিরীক্ষা, রেলওয়ে নিরীক্ষা, ডাক, তার ও টেলিফোন নিরীক্ষা, প্রতিরক্ষা নিরীক্ষা, বৈদেশিক মিশন নিরীক্ষা, কৃতি নিরীক্ষা (performance audit) এবং অর্থ ব্যবস্থাপনা একাডেমি।

নিরীক্ষার প্রধান প্রকারভেদ হলো বিধিগত (রেগুলারিটি) অডিট, আর্থিক বিবরণী (ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট) অডিট এবং কৃতি (পারফরমেন্স) অডিট। বিভিন্ন অধিদপ্তর প্রায় একই পদ্ধতি অনুসরণ করে, তবে নিরীক্ষিত সংগঠনের বিভিন্নতার উপর নির্ভর করে পদ্ধতিতে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে কোম্পানির হিসাব নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক।
  • বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস (ICAB) আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা মান অনুসরণ করে।
  • রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের হিসাব তিন স্তরে নিরীক্ষা করা হয়।
  • সরকারি নিরীক্ষার দায়িত্ব কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল (CAG) এর উপর ন্যস্ত।
  • নিরীক্ষার তিনটি প্রধান প্রকার আছে: বিধিগত, আর্থিক বিবরণী এবং কৃতি নিরীক্ষা।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।