নাটোরের দিঘাপতিয়া

আপডেট: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ৭:০৮ এএম

নাটোরের দিঘাপতিয়া: ঐতিহাসিক গৌরবের সাক্ষী

নাটোর শহরের কাছে অবস্থিত দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি, বর্তমানে উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যগত দিক দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রায় তিনশ বছরের ইতিহাস বয়ে বহমান এই রাজবাড়িটি দিঘাপতিয়া রাজবংশের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা দয়ারাম রায়। তিনি নাটোর রাজ্যের রাজা রামজীবনের দেওয়ান ছিলেন। ১৭৩৪ সালে তিনি প্রায় ৪৩ একর জমির উপর দিঘাপতিয়া প্রাসাদের মূল অংশ নির্মাণ করেন। পরে ১৮৯৭ সালে একটি ভয়াবহ ভূমিকম্পে রাজবাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাজা প্রমোদনাথ রায় ১৮৯৭ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত ১১ বছর সময় ধরে বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও দেশীয় মিস্ত্রিদের সহায়তায় রাজবাড়িটি পুনর্নির্মাণ করেন। এই পুনর্নির্মাণের পর রাজবাড়িটি মোগল ও পাশ্চাত্য স্থাপত্যশৈলীর এক অপরূপ সমন্বয় হিসেবে দাঁড়ায়।

রাজবাড়িটিতে মোট ১২টি ভবন রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রধান প্রাসাদ, কুমার প্রাসাদ, কাচারি ভবন, কর্তারাণী বাড়ি, রান্নাঘর, মোটর গ্যারেজ এবং অন্যান্য। রাজবাড়ির চারপাশে উঁচু প্রাচীর ও পরিখা রয়েছে, এবং পূর্ব দিকে রয়েছে চারতলাবিশিষ্ট পিরামিড আকৃতির প্রবেশদ্বার। প্রাসাদের ভেতরে রয়েছে বিশাল বাগান, ফোয়ারা, এবং বিরল প্রজাতির গাছপালা।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর দিঘাপতিয়া রাজারা ভারতে চলে যান। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর রাজবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা দেখা দেয়। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান এটিকে গভর্নরের বাসভবন হিসেবে উদ্বোধন করেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নাম পরিবর্তন করে উত্তরা গণভবন রাখেন।

বর্তমানে উত্তরা গণভবন উত্তরবঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আঞ্চলিক কার্যালয় এবং বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি পর্যটকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় অনুমতি সাপেক্ষে উন্মুক্ত। এই ঐতিহাসিক স্থানটি বাংলাদেশের ইতিহাস ও স্থাপত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আশা করি ভবিষ্যতে আরও তথ্য যোগ করে এই লেখা সমৃদ্ধ করা সম্ভব হবে।

দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি, উত্তরা গণভবন, নাটোরের ঐতিহাসিক স্থান, বাংলাদেশের ইতিহাস

মূল তথ্যাবলী:

  • দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি, বর্তমানে উত্তরা গণভবন নামে পরিচিত
  • ১৭৩৪ সালে রাজা দয়ারাম রায় প্রতিষ্ঠা
  • ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ও পুনর্নির্মাণ
  • ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উত্তরা গণভবন ঘোষণা
  • ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও বাগান

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - নাটোরের দিঘাপতিয়া

১৭০৬

দয়ারাম রায় এখানে জমিদারী লাভ করেন।