নাটোরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে ওই শ্মশান থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ভবঘুরে তরুণ কুমার দাসের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অজ্ঞাত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ তাকে হত্যা করে শ্মশানের ভাণ্ডার কক্ষ থেকে কিছু কাঁসা ও পিতলের মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে।
তরুণ কুমার দাস শহরের আলাইপুর ধোপাপাড়া এলাকার বাসিন্দা কালীপদ দাসের ছেলে। কয়েকটি গণমাধ্যম তাকে মন্দির ও মহাশ্মশানের সেবায়েত বা পাহারাদার হিসেবে উল্লেখ করলেও, দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন তিনি ছিলেন মানসিকভাবে অসুস্থ একজন ভবঘুরে। মহাশ্মশানের সাধারণ সম্পাদক সত্য নারায়ণ রায় টিপু জানিয়েছেন, তরুণ প্রায় প্রতিরাতেই মহাশ্মশানের রান্নাঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে কাটাতেন। নাটোর পৌরসভার অর্থায়নে শ্মশানে চারজন কর্মচারী থাকলেও, তিনি শ্মশানের কর্মচারী ছিলেন না।
তরুণের ভাই প্রদীপ দাস ও ছেলে তপু কুমার দাস জানিয়েছেন, তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতেন। নাটোর পৌরসভার প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল জানান, তরুণকে শহরের অনেকেই চিনতেন। তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আবোল-তাবোল কথা বলতেন এবং কুকুরের সাথে খেলা করতেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের এক বিবৃতিতে তরুণকে মন্দিরের দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত বলা হলেও, সংগঠনের নাটোর জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট খগেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন, বিবৃতিতে তরুণের পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নাটোর সদর থানার ওসি মো. মাহাবুর রহমান জানান, তদন্তের জন্য রাজশাহী থেকে সিআইডি এবং ক্রাইমসিন ইউনিট এসেছে। পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন আশ্বাস দিয়েছেন, তারা অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনবে।