দুর্গাপুর উপজেলার বিস্তারিত বর্ণনা
বাংলাদেশে দুটি দুর্গাপুর উপজেলা রয়েছে - একটি নেত্রকোণা জেলায় এবং অন্যটি রাজশাহী জেলায়। এই নিবন্ধে উভয় উপজেলার সংক্ষিপ্ত তথ্য দেওয়া হলো:
১. দুর্গাপুর উপজেলা (নেত্রকোণা):
- অবস্থান ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য: নেত্রকোণা জেলার উত্তরাংশে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। আয়তন ২৭৯.২৮ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে ভারতের মেঘালয়, দক্ষিণে নেত্রকোণা সদর ও পূর্বধলা উপজেলা, পূর্বে কলমাকান্দা উপজেলা, পশ্চিমে ধোবাউড়া উপজেলা। উত্তরাংশে গারো পাহাড় ও উপত্যকা অবস্থিত। প্রধান নদী: কংস, সোমেশ্বরী ও পুরাতন সোমেশ্বরী। চিনাকুড়ি বিল ও চিতলী বিল উল্লেখযোগ্য জলাশয়।
- জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী: জনসংখ্যা প্রায় ২২৪,৮৭৩ (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)। মুসলিম ২০২,৬১৩, হিন্দু ১৩,২১০, খ্রিস্টান ৮,৭৩৭, এবং অন্যান্য। গারো ও হাজং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
- প্রশাসন: দুর্গাপুর থানা গঠিত হয় ১৮৭৪ সালে, এবং ১৯৮২ সালে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
- ঐতিহাসিক ঘটনা: ১৯শ শতাব্দীর শেষভাগে হাজং বিদ্রোহ (মনা সর্দারের নেতৃত্বে), ১৯৪২-৪৩ সালে কমরেড মণি সিংহের নেতৃত্বে টংক আন্দোলন, ১৯৪৬-৪৭ সালে তেভাগা আন্দোলন (মণি সিংহের নেতৃত্বে) এবং ১৮৪৮ সালে গারো বিদ্রোহ উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধে গাঁওকান্দিয়া গ্রামে পাকবাহিনীর হত্যাকাণ্ড ও বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
- অর্থনীতি: কৃষি প্রধান অর্থনীতি। ধান, পাট, গম, সরিষা, চিনাবাদাম, ভুট্টা, তুলা প্রধান ফসল। শিক্ষার হার ৩৯.৫%।
- দর্শনীয় স্থান: মাসকান্দা গ্রামের প্রাচীন মসজিদ, দুর্গাপুর শহীদ স্মৃতিসৌধ।
২. দুর্গাপুর উপজেলা (রাজশাহী):
- অবস্থান ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য: রাজশাহী জেলার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। আয়তন ১৯৭.৮৯ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে বাগমারা এবং মোহনপুর উপজেলা, দক্ষিণ ও পূর্বে পুঠিয়া উপজেলা, পশ্চিমে পবা উপজেলা। হোজা ও বারনাই নদী এবং বিভিন্ন বিল উল্লেখযোগ্য।
- জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী: জনসংখ্যা প্রায় ১৮৫,৮৪৫ (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)। মুসলিম ১৮০,৭৮৬, হিন্দু ৪০৭৩, খ্রিস্টান ৬৪৪, এবং অন্যান্য। ওরাওঁ, সাঁওতাল প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
- প্রশাসন: দুর্গাপুর থানা গঠিত হয় ১৯০৯ সালে, এবং ১৯৮৪ সালে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
- ঐতিহাসিক ঘটনা: মুক্তিযুদ্ধে কাবাসমূল, ঝলমলিয়া ব্রিজ, ও হাট গোদাগাড়িতে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
- দর্শনীয় স্থান: কিসমত মসজিদ (মাড়িয়া), রুইপাড়া জামে মসজিদ, পাঁচুবাড়ী পাঁচগম্বুজ জামে মসজিদ, কালী মন্দির (কালীদহ), নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ।
- অর্থনীতি: কৃষি প্রধান অর্থনীতি। ধান, গম, আলু, পান, তুত, শাকসবজি প্রধান ফসল। শিক্ষার হার ৪৮.২%।
উভয় উপজেলার সাধারণ বৈশিষ্ট্য:
- উভয় উপজেলায়ই কৃষিকাজ প্রধান পেশা।
- উভয় উপজেলায়ই বিভিন্ন ধর্ম ও জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত বসবাস।
- উভয় উপজেলায়ই ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে।
বিঃদ্রঃ: উপজেলা দুটির সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে পরবর্তীতে এই নিবন্ধটি আপডেট করা হবে।