সো উইন: মিয়ানমারের সামরিক জগতের এক রহস্যময় চরিত্র
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী সো উইনকে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জনসম্মুখে দেখা যায়নি। তার অনুপস্থিতি এবং নিয়তি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে দেশটিতে। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনেকেই মনে করছেন ৯ এপ্রিল বিদ্রোহীদের ড্রোন হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন সো উইন।
ঘটনার সূত্রপাত:
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী সো উইন মিয়াওয়াদি টাউনশিপের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেই সময় বিদ্রোহীরা সেখানে ড্রোন হামলা চালায়। এই হামলার পর থেকেই তিনি জনসম্মুখে দেখা দেননি। মিয়ানমারের প্রথাগত নববর্ষ উদযাপনের সময় প্রশাসনিক রাজধানী নেপিডোতে সো উইনের অনুপস্থিতি অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করে। এর আগে কখনোই তিনি এই আয়োজনে অনুপস্থিত থাকেননি।
জল্পনা-কল্পনা:
সো উইনের অনুপস্থিতি নিয়ে নানা তথ্য উঠে আসছে। কিছু সংবাদ মাধ্যম দাবি করে, ৯ এপ্রিলের ড্রোন হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন দুইবার বক্তব্য দিয়েও তাঁর অনুপস্থিতির রহস্য উন্মোচন করতে পারেননি। এমনকি মিন অং হ্লাইং সো উইনকে বরখাস্ত করেছেন বলেও গুজব শোনা যাচ্ছে।
সো উইনের অনুপস্থিতির কারণে জল্পনা:
গত পাঁচ মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বেশ কয়েকবার পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে এবং অসম্মানের শিকার হয়েছে। সামরিক জান্তা প্রধান হ্লাইং এর জনপ্রিয়তা কমেছে এবং সামরিক বাহিনীর কিছু কিছু সমর্থকরা সো উইনকে হ্লাইং এর স্থলাভিষিক্ত করার পরিকল্পনা করছিলেন বলেও অনেকে ধারণা করছেন।
বিদ্রোহীদের দাবি:
বিদ্রোহী বাহিনী দাবি করেছে, ৮ ও ৯ এপ্রিল মালামিনে শহরের কমান্ড হেডকোয়ার্টারে ড্রোন হামলা চালানোর সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সো উইন। বিদ্রোহী গোষ্ঠী শার হতু বাও টেকনিকাল ফোর্সের একটি ইউনিট এই ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ৯ এপ্রিলের ড্রোন হামলায় একজন ট্যাকটিকাল কমান্ডার, ডেপুটি আর্টিলারি ডিরেক্টর ও সাউথ ইস্টার্ন কমান্ডের এক কর্নেল নিহত হয়েছে। তাদের আরো দাবি হল এই হামলার সময় সো উইনের ওপর একটি বিম ভেঙে পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন।
উপসংহার:
সো উইনের অনুপস্থিতির রহস্য এখনো উন্মোচিত হয়নি। তার নিয়তি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা থেমে নেই। আরো তথ্য প্রকাশ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হবে।