শেখ তৈয়বুর রহমান (২১ অক্টোবর ১৯৩৬ - ১ জানুয়ারি ২০১৬) ছিলেন একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, আইনজ্ঞ, সাবেক মন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
তিনি ১৯৩৬ সালের ২১ অক্টোবর বাগেরহাট সদরের কররী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি বাগেরহাটের মধুদিয়া ইচ্ছাময়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক এবং বাগেরহাট পি.সি. কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.বি. ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি নিজ গ্রামের মধুদিয়া ইচ্ছাময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর বিনা বেতনে শিক্ষকতা করেন এবং পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৩ সালে তিনি খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতিতে যোগদান করেন এবং ১৯৭৮ সালে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি কররী কৃষি ও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৯ সালে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী সমিতিতে যোগদান এবং ১৯৮৮ সালে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩৪তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে সেনেগালে যোগদান করেন এবং মালি, মৌরিতানিয়া, আইভরি কোস্ট, সিয়েরা লিওন, গিনি ও গাম্বিয়ার দায়িত্বও পালন করেন। রাষ্ট্রদূত থাকাকালীন সেনেগালের রাষ্ট্রপতি তাকে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য স্বর্ণপদক প্রদান করেন।
১৯৬৫ সালে তিনি ন্যাপের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং খুলনা জেলার সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠনের পূর্বে তিনি খুলনা জেলা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি ছিলেন এবং রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পূর্বে সংগঠিত ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি তিনবার খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন (মোট ১৭ বছর ১০ মাস)। তার মৃত্যু হয় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি, ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে খুলনার নার্গিস মেমোরিয়াল ক্লিনিকে।