ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ: ঐতিহ্য, শিক্ষা ও উৎকর্ষ
ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ (DRMC), বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী ও সম্মানিত আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত, এই কলেজটি ইংল্যান্ডের খ্যাতনামা পাবলিক স্কুলগুলোর আদলে গড়ে তোলা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে পূর্ব পাকিস্তানের অভিজাত সামরিক কর্মকর্তা ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও, বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।
প্রতিষ্ঠানটি তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করে। দুইটি শিফটে (প্রভাতী ও দিবা) পাঠদান করা হয়। কলেজের বিশাল ৫২ একর জমিতে অত্যাধুনিক একাডেমিক ভবন, ৬টি আবাসিক ভবন (হাউজ), প্রশাসনিক ভবন, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান গবেষণাগার, অডিটোরিয়াম, হাসপাতাল, মসজিদসহ অন্যান্য অবকাঠামো রয়েছে।
DRMC এর হাউজ সিস্টেম ইটন কলেজের আদলে তৈরি, যেখানে ছাত্ররা আবাসিক হিসেবে থাকে এবং বিভিন্ন সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি হাউজে একজন হাউস মাস্টার, হাউস টিউটর, স্টাফ এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকে যারা ছাত্রদের দেখাশোনা করে। হাউজ গুলির নামকরণ করা হয়েছে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামানুসারে।
শিক্ষার মান বজায় রাখতে কলেজটি নিয়মিতভাবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। শিক্ষাবর্ষকে দুইটি সেমিস্টারে ভাগ করে পাঠদান করা হয় এবং নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ছাত্ররা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়াশোনা করতে পারে।
সহ-পাঠ্যক্রমিক কর্মসূচিতে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা, স্কাউটিং, জুনিয়র ক্যাডেট কোর (BNCC) ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, বিভিন্ন ক্লাবের মাধ্যমে ছাত্রদের সৃজনশীলতা ও নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ দেওয়া হয়।
DRMC বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় এবং বিভিন্ন পেশায় সফলতা অর্জন করেছে। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান যা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ও উৎকর্ষের মান বজায় রাখার জন্য পরিচিত। তবে, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় এই কলেজের একজন ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
দেশের অন্যতম খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ