ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর নামটি দুটি ভিন্ন অর্থ বহন করে। এক্ষেত্রে দুটি আলাদা বিষয়ের কথা বলা হয়েছে। প্রথমত ঢাকা শহরের একটি ঐতিহাসিক নাম হলো জাহাঙ্গীরনগর। দ্বিতীয়ত ঢাকার কাছে সাভারে অবস্থিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা (জাহাঙ্গীরনগর):
১৬১০ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সুবেদার ইসলাম খান চিশতি রাজধানী রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামে শহরটির নামকরণ করেন জাহাঙ্গীরনগর। তবে জনসাধারণের কাছে ঢাকা নামটিই প্রচলিত ছিল। ঢাকা এর অবস্থান পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার সঙ্গমস্থলে এবং বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে যেখানে নদী যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত সুবিধাজনক। প্রাক-মুঘল যুগে ঢাকা স্থানীয় বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। মুঘল আমলে ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়, শিল্প-কারখানা ও বাণিজ্য বিকাশ লাভ করে, বিশেষ করে মসলিন বস্ত্রের উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য। মুর্শিদাবাদে রাজধানী স্থানান্তরিত হওয়ার পরেও ঢাকা প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব ধরে রাখে, এবং ইউরোপীয় কোম্পানির কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। ১৮০০ এর পর ঢাকা ধীরে ধীরে আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে ওঠে। ব্রিটিশ, পাকিস্তানী এবং স্বাধীন বাংলাদেশ কালে ঢাকা ক্রমশ সম্প্রসারিত হয় এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়:
১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা শহরের ঐতিহাসিক নাম ‘জাহাঙ্গীরনগর’ এর স্মৃতি রেখে ঢাকার কাছে সাভারে প্রতিষ্ঠিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস ৬৯৭.৫৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে ৪টি ইনস্টিটিউট, ৬টি অনুষদ এবং ৩৬টি বিভাগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এবং শিক্ষা, গবেষণা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য খ্যাতিমান।