টেন মিনিট স্কুল: বাংলাদেশের অনলাইন শিক্ষার এক নতুন দিগন্ত
টেন মিনিট স্কুল (১০ মিনিট স্কুল), বাংলাদেশের একটি অগ্রণী ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা ২০১৫ সালে শিক্ষা উদ্যোক্তা আয়মান সাদিক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশী মোবাইল অপারেটর রবি এর উল্লেখযোগ্য সহায়তা করেছিল। টেন মিনিট স্কুলের প্রধান লক্ষ্য হল সহজলভ্য এবং সুগম শিক্ষা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই প্রতিষ্ঠান ইউটিউব, ফেসবুক এবং তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত লেকচার ও বিভিন্ন শিক্ষা সংক্রান্ত উপকরণ প্রদান করে। শিক্ষা উপকরণগুলো মূলত বাংলা ভাষায় তৈরি করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, এবং বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে বিনামূল্যে ও পেইড কোর্স প্রদান করে। স্মার্টবুক, ব্লগ, এবং লাইভ ক্লাসের মতো বিভিন্ন অনুষঙ্গ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাকে আরও সহজ এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। বর্তমানে, এই প্রতিষ্ঠানের সাড়ে তেরো লাখের ও অধিক সক্রিয় সদস্য আছে।
আয়মান সাদিক ২০১৪ সালে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেন। প্রথম দিকে তিনি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক তথ্য গ্রাফিক্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতেন। পরে, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরি করা শুরু হয় এবং ফেসবুকে লাইভ ক্লাস নেওয়া হয়। ধীরে ধীরে, ১০ মিনিট স্কুল প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পুরো একাডেমিক সিলেবাস, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা এবং বিভিন্ন সফ্টওয়্যার ও দক্ষতা প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করে।
টেলিকম অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে টেন মিনিট স্কুল বিনিয়োগ পেয়েছে। তবে ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়, আয়মান সাদিকের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশের পর স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড তাদের বিনিয়োগের প্রস্তাব বাতিল করে। এই ঘটনাটি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা ও সমালোচনা হয়েছিল।
২০২০ সালে সমকামিতা সমর্থন এবং অন্যান্য সামাজিক বিষয় নিয়ে প্রচারণা কার্যক্রম ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তবে, পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ক্ষমা চেয়ে এই বিতর্কের অবসান ঘটে। জুন ২০২০ এ টেন মিনিট স্কুলের ওয়েবসাইটে প্রায় ১৭,৪৪০+ শিক্ষণীয় ভিডিও, ৯১৪+ স্মার্টবুক, ৪৯,৫৩০+ কুইজ, এবং ১,২৩৪+ ব্লগ থাকার তথ্য প্রকাশ পায়। টেন মিনিট স্কুল এখনও বাংলাদেশের অনলাইন শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। আরো বিস্তারিত তথ্য পেলে আমরা আপনাদের নিরন্তর আপডেট দিতে থাকবো।