টেংরা: বাংলাদেশের ছোট্ট কিন্তু মূল্যবান মাছ
বাংলাদেশের নদী-নালা, বিল-বাওড় এবং হাওরের জলাশয়গুলোতে টেংরা মাছ একটি পরিচিত নাম। এই ছোট্ট মাছটি স্বাদের পাশাপাশি পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। দেশের মানুষের খাদ্যতালিকায় টেংরার একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। তবে, অনেকেই হয়ত জানেন না এটি কতটা স্বাস্থ্যকর এবং এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব কতখানি।
টেংরার প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য:
'টেংরা' নামটি একাধিক প্রজাতির মাছের জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রধানত Mystus গণের মাছগুলোকে টেংরা বলা হয়। তবে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির টেংরা পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, Mystus vittatus, Mystus bleekeri, Mystus gulio, Mystus cavasius এবং Batasio tengana কেউ কেউ টেংরা বলে অভিহিত করেন। Batasio tengana ছোট আকারের টেংরা এবং এর ইংরেজি নাম Batasio। এটি Bagridae পরিবারের অন্তর্গত। সকল টেংরার দেহ প্রায় গোলাকার, আঁশহীন এবং পিচ্ছিল। মাথায় দুই জোড়া গোঁফ থাকে। আত্মরক্ষার জন্য ফুলকার দুই পাশে দুইটি এবং পিঠে একটি সরু কাঁটা থাকে। পিঠের উপরের অংশ কালচে এবং পেটের দিকটা সাদা হয়ে থাকে।
জীবনচক্র ও আবাসস্থল:
টেংরা মিঠা পানির দেশীয় মাছ। সাধারণত নদী, খাল, বিল, ডোবা-নালা, ধানক্ষেত ও পুকুরে পাওয়া যায়। ৩ মাস বয়সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়। মে মাসের শেষের দিকে ডিম ধারণ করে এবং প্রায় এক মাস পর জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে ডিম ছাড়ে। হাজার হাজার বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে। এদের বাসস্থান সাধারণত পানির মধ্যস্তর।
পুষ্টিগুণ:
টেংরা মাছ পুষ্টিগুণে ভরপুর। ১০০ গ্রাম টেংরা মাছে ১৪৪ ক্যালরি শক্তি, ১৯.২ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৫ গ্রাম চর্বি, ২৭০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ২ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। রক্তশূন্যতার রোগীদের জন্য এটি উপকারী।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও চাষ:
টেংরা মাছের বাণিজ্যিক চাষ ব্যাপকভাবে হয় না, তবে পুকুরে চাষ করা সম্ভব। ইউরোপের বাজারে অ্যাকোয়ারিয়াম ফিশ হিসেবে এর চাহিদা রয়েছে। এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে গ্রামীণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এটি পুষ্টির একটি মূল্যবান উৎস।
অতিরিক্ত তথ্য:
টেংরা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য, আমরা পরবর্তীতে বিস্তৃত গবেষণা এবং উপাত্ত সংগ্রহ করার চেষ্টা করব। এই তথ্য আপডেট করে আমরা পরবর্তীতে এই নিবন্ধটি আপডেট করব।