টিভি সাংবাদিক

টিভি সাংবাদিকদের করুণ বাস্তবতা: বেতন-ভাতা থেকে চাকরিচ্যুতি পর্যন্ত

দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে কর্মরত সাংবাদিকদের জীবনে নানাবিধ সমস্যা বিরাজ করছে। সম্প্রতি ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) কর্তৃক পরিচালিত একটি জরিপে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে দেখা গেছে, শুধুমাত্র চলতি বছরেই ১৫০ জনের বেশি সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ৩৫% টেলিভিশনে বেতন অনিয়মিত, আর ২০% টেলিভিশনে বেতন দুই থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত বকেয়া থাকে।

জরিপে আরও উঠে এসেছে, ৭৯% টেলিভিশনের কর্মীদের স্বাস্থ্যবিমা নেই, ৭২% এর জীবনবিমা নেই এবং প্রায় ৭৬% টেলিভিশনে প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধা নেই। ৯০% টেলিভিশনে গ্র্যাচুইটির কোন সুবিধা নেই এবং ৯০% টেলিভিশনে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির কোন ব্যবস্থা নেই। উৎসব ভাতাও ৩৪% এর বেশি টেলিভিশনে দেওয়া হয় না। চাকরিচ্যুতির নোটিশ সময়মতো দেওয়া হয় না প্রায় ৪৫% টেলিভিশনে এবং ৪৮% এর বেশি টেলিভিশনে চাকরিচ্যুতির কোন সুবিধাই দেওয়া হয় না।

ছুটির দিনে অতিরিক্ত সময় কাজের মজুরি দেয় না ৭২% এর বেশি টেলিভিশন। বৈশাখী ভাতা দেওয়া হয় না ৯৭% টেলিভিশনে। ৯০% টেলিভিশনে ‘ডে কেয়ার’ সুবিধা নেই এবং ৯৩% টেলিভিশনে মাতৃত্বকালীন ছুটি থাকলেও তা মাত্র তিন থেকে চার মাস। ৮২% টেলিভিশনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই।

বিজেসির পঞ্চম সম্প্রচার সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়। সম্মেলনে বিজেসির নির্বাহী ও সম্প্রচার সম্মেলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহনাজ শারমীন, চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক, প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক খায়রুল আনোয়ার, এমআরডিআইর নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ), সম্প্রচার সম্মেলনের আহ্বায়ক ফাহিম আহমেদ, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক মেহেদী হাসানের স্ত্রী ফারহানা ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • চলতি বছরে ১৫০+ টিভি সাংবাদিক চাকরিচ্যুত
  • ৩৫% টিভি চ্যানেলে অনিয়মিত বেতন
  • ৭৯% টিভি সাংবাদিকের স্বাস্থ্যবিমা নেই
  • বেশিরভাগ টিভি চ্যানেলে গ্র্যাচুইটি ও বেতন বৃদ্ধির কোন ব্যবস্থা নেই
  • অনেক টিভিতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই