জ্বর: একটি বিস্তারিত আলোচনা
জ্বর (Fever), যা পাইরেক্সিয়া নামেও পরিচিত, শারীরিক অসুস্থতার একটি প্রধান লক্ষণ। এটি শরীরের তাপমাত্রা 37.2°C (99°F) এর উপরে উঠে যাওয়াকে বোঝায়। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে সাধারণত ঠান্ডা অনুভূতি হয়। জ্বর অনেক কারণে হতে পারে; সংক্রমণ (ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, পরজীবী), প্রদাহ, অটোইমিউন রোগ, ক্যান্সার, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি।
জ্বরের প্রকারভেদ:
জ্বরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ধরণের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের জ্বর থাকে, যেমন:
- একটানা জ্বর: 24 ঘণ্টায় 1°C এর বেশি তাপমাত্রার পরিবর্তন হয় না। (উদাহরণ: নিউমোনিয়া, টাইফয়েড)
- অনিয়মিত জ্বর: 24 ঘণ্টায় তাপমাত্রা বারবার ওঠানামা করে কিন্তু স্বাভাবিক হয় না। (উদাহরণ: ডেঙ্গু)
- নির্দিষ্ট সময় অন্তরালে জ্বর: জ্বর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাড়ে এবং তারপর স্বাভাবিক হয়ে যায়। (উদাহরণ: ম্যালেরিয়া)
- স্বল্প বিরতিতে জ্বর: শরীরের তাপমাত্রা সারাদিন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে এবং 24 ঘণ্টায় 1°C এর বেশি ওঠানামা করে।
- Pel-Ebstein জ্বর: হজকিন লিম্ফোমা রোগে দেখা দেয়।
জ্বরের লক্ষণ:
জ্বরের সাথে সাধারণত অসুস্থতা, অবসাদ, ক্ষুধামান্দ্য, ঘুম, শরীর ব্যথা, মনোযোগ ঘাটতি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
জ্বরের চিকিৎসা:
জ্বর নিজে কোন রোগ নয়, তাই এর চিকিৎসা অন্তর্নিহিত রোগের উপর নির্ভর করে। সাধারণ জ্বরে বিশ্রাম, প্রচুর তরল পান এবং অ্যাসিটামিনোফেন বা আইবুপ্রোফেনের মতো জ্বর কমানোর ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। উচ্চ জ্বর, দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, অথবা অন্যান্য লক্ষণ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত।
কখন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করবেন:
- তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে
- উচ্চ জ্বর (104°F বা তার বেশি)
- জ্বরের সাথে অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ যেমন শ্বাসকষ্ট, বমি, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, পেট ব্যথা থাকলে
- শিশুদের জ্বর হলে
উল্লেখ্য: এই তথ্য শুধুমাত্র তথ্যমূলক এবং চিকিৎসা পরামর্শের বিকল্প নয়। যেকোনো জ্বর বা স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।