জোয়ার: একটি বহুমুখী শব্দ
জোয়ার শব্দটি বাংলা ভাষায় দুটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। একটি অর্থে জোয়ার বলতে বোঝায় সমুদ্রের পানির নিয়মিত উত্থান ও পতন, আর অন্যটিতে বোঝায় একটি বর্ষজীবী শস্য। এই নিবন্ধে আমরা উভয় অর্থেরই বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা:
চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে সমুদ্রের পানি নিয়মিতভাবে উত্থান ও পতন ঘটে, যাকে জোয়ার-ভাটা বলে। চাঁদের আকর্ষণ বল প্রধান কারণ। এই আকর্ষণের ফলে চাঁদের কাছাকাছি অংশে জল ফুলে ওঠে (জোয়ার) এবং বিপরীত দিকেও জোয়ার হয়। জোয়ার-ভাটা প্রতি ৬ ঘণ্টা ১৩ মিনিট অন্তর ঘটে, অর্থাৎ দিনে দুইবার জোয়ার ও দুইবার ভাটা হয়। পূর্ণিমা ও অমাবস্যার সময় চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণের ফলে সবচেয়ে উঁচু জোয়ার (তেজ কটাল) হয়, অন্যদিকে, প্রথম ও তৃতীয় পক্ষের সময় জোয়ার সবচেয়ে কম (মরা কটাল) হয়।
জোয়ারের অর্থনৈতিক গুরুত্ব:
জোয়ার-ভাটা লবণ উৎপাদন, নৌযান চলাচল, এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে, অত্যধিক জোয়ার বন্যা, ক্ষতি, ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে।
জোয়ার (শস্য):
জোয়ার (Sorghum bicolor) হলো একটি বর্ষজীবী শস্য যা পশুখাদ্য এবং মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি আফ্রিকায় উদ্ভব হয়েছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন উষ্ণ ও উপ-উষ্ণ অঞ্চলে চাষ করা হয়। এই শস্যটি খরা ও উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে এবং কম উর্বর মাটিতেও জন্মাতে পারে। জোয়ারের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে, কিছু প্রজাতি শর্করা সমৃদ্ধ (sweet sorghum) যা সিরাপ ও জ্বালানী উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বে জোয়ার চাষের প্রধান দেশগুলির মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, এবং ইথিওপিয়া অন্যতম।
আরও তথ্য:
জোয়ার (সমুদ্র) ও জোয়ার (শস্য) সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার জন্য আপনি সমুদ্রবিদ্যা ও কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রন্থ ও ওয়েবসাইট পড়তে পারেন।