জোমো কেনিয়াত্তা (প্রায় ১৮৯৭ - ২২ আগস্ট, ১৯৭৮) কেনিয়ার একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। কেনিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদান অসামান্য। ১৯৬৩ সালে কেনিয়া স্বাধীন হওয়ার পর তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী এবং ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৮ সালে মৃত্যু পর্যন্ত কেনিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কেনিয়ার জনগণ তাঁকে 'জাতির জনক' হিসেবে সম্মান করে।
কেনিয়াত্তা কেনিয়ার কিকুয়ু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত ছিলেন। তাঁর জন্ম নাম ছিল কামাউ ওয়া জেনজি। তাঁর জন্ম তারিখ নিয়ে কিছুটা দ্বিমত রয়েছে, তবে প্রায় ১৮৯৭ সালে কেনিয়ার গাতান্দুতে জন্মগ্রহণ করেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি প্রথমে মিশনারি স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে ইংল্যান্ড ও মস্কোতে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।
রাজনীতিতে যোগদানের আগে কেনিয়াত্তা কাঠমিস্ত্রি, কৃষিকর্মী ও স্কুল শিক্ষকের মতো নানা পেশায় কর্মরত ছিলেন। ১৯২৯ সালে ব্রিটিশ সরকারের কিকুয়ুদের জমি সংক্রান্ত নীতির প্রতিবাদে তিনি লন্ডনে যান। ১৯৪৫ সালে তিনি ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত প্যান-আফ্রিকান কংগ্রেসে অংশ নেন।
কেনিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে ১৯৫২ সালে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ গ্রেপ্তার করে। মৌ মৌ বিদ্রোহের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তাঁকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৫৯ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন এবং ১৯৬১ সালে কেনিয়া আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কানু) দলের নেতা হন।
রাষ্ট্রপতি হিসাবে তাঁর শাসনামলে কেনিয়ার অর্থনীতিতে উন্নতি সাধিত হয় এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপক উন্নয়ন হয়। তবে তাঁর শাসনামল সময়ে দুর্নীতিরও ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটে।
জোমো কেনিয়াত্তার নামে কেনিয়ার নাইরোবির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বিশ্ববিদ্যালয়, সড়ক ও অন্যান্য অনেক স্থাপনার নামকরণ করা হয়েছে। কেনিয়ার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার কারণে তাঁকে কেনিয়ার জনগণের কাছে একজন মহান নেতা হিসেবে স্মরণ করা হয়। তবে তাঁর শাসনামলে দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে।