জেলা প্রশাসক

জেলা প্রশাসক: বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোর এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো জেলা প্রশাসক। তিনি জেলার মুখ্য আমলা ও ভূমি রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। তার দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে ভূমি ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, এবং নির্বাচন পরিচালনা। জেলা প্রশাসক একজন গ্রেড-৫ এর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তা, যিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে কাজ করেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি জবাবদিহি করেন। তিনি ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), জেলা কালেক্টর ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:

ব্রিটিশ শাসনামলে ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস জেলা কালেক্টরের পদ সৃষ্টি করেন। পরবর্তীতে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ক্ষমতা যুক্ত হলে তাকে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বও দেওয়া হয়। পাকিস্তান আমলে জেলার উন্নয়নমূলক কাজের সমন্বয়ের জন্য ডেপুটি কমিশনারের পদ সৃষ্টি করা হয়। ২০০৭ সালে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর জেলা প্রশাসকদের বিচারিক ক্ষমতা পৃথক করে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদ সৃষ্টি করা হয়।

কার্যক্রম:

জেলা প্রশাসক জেলার প্রায় ১২০ টি কমিটির সভাপতি। তিনি প্রতি পনের দিন অন্তর সরকারকে গোপনীয় প্রতিবেদন (FCR) পাঠান। জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রধান কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তাদের মূল নিয়ন্ত্রণ করে। জেলা প্রশাসক জেলার মুখ্য প্রটোকল অফিসারও বটে।

উল্লেখ্য:

জেলা প্রশাসক শব্দটি ডেপুটি কমিশনারের সরল অনুবাদ নয়, বরং বর্তমান বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় এর ব্যবহার প্রচলিত। ঐতিহাসিক কারণে কালেক্টরেট নামেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পরিচিত।

মূল তথ্যাবলী:

  • জেলা প্রশাসক জেলার মুখ্য আমলা ও ভূমি রাজস্ব কর্মকর্তা
  • তিনি ভূমি ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন
  • জেলা প্রশাসক ডিসি, জেলা কালেক্টর ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন
  • তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে কাজ করেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি জবাবদিহী
  • ব্রিটিশ আমলে ১৭৭২ সালে জেলা কালেক্টরের পদ সৃষ্টি হয়