জিতেন্দ্র: একজন কিংবদন্তী
জিতেন্দ্র, ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক অম্লান কিংবদন্তী। ৭ই এপ্রিল, ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে রবি কাপুর নামে জন্মগ্রহণকারী এই অভিনেতা, টিভি ও চলচ্চিত্র প্রযোজক, এবং বালাজী টেলিফিল্মস, বালাজী মোশন পিকচার্স ও আল্ট এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবেও পরিচিত। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে অবদান রেখেছেন তিনি। তার নৃত্যশৈলী দর্শকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তেলুগু সহ দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের অনেক হিট ছবির হিন্দি পুনঃনির্মাণে অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে ১২১টিরও বেশি হিট চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে অনন্য স্থান করে নিয়েছেন। ২০০৩ সালে ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার এবং ২০০৬ সালে স্ক্রিন আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এই কিংবদন্তী।
তার প্রাথমিক জীবন:
জিতেন্দ্রের পিতা অমরনাথ কাপুর ও মাতা কৃষ্ণা কাপুর নকল গহনার ব্যবসা করতেন, যা চলচ্চিত্রে সরবরাহ করা হত। মুম্বইয়ের গিরগোমের সেন্ট সেবাস্টিয়ান্স গোয়ান হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। তার সহপাঠী ছিলেন রাজেশ খান্না। পরে তিনি মুম্বইয়ের সিদ্ধার্থ কলেজে পড়াশোনা করেন। ভি. শান্তরামের সাথে কাজের সূত্রে তিনি চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন।
চলচ্চিত্রে জিতেন্দ্রের অবদান:
জিতেন্দ্রের কর্মজীবনে প্রথম সাফল্য আসে ১৯৬৪ সালের ‘গীত গায়া পাথরোঁ নে’ চলচ্চিত্র দিয়ে। তবে ১৯৬৭ সালের ‘ফর্জ’ ছবিটি তার কর্মজীবনে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে। এই চলচ্চিত্রে ‘মস্ত বাহারোঁ কা ম্যায়ঁ আশিক’ গানের জন্য তিনি মুম্বইয়ের একটি দোকান থেকে নেওয়া টি-শার্ট আর সাদা জুতা পরেছিলেন, যা পরবর্তীতে তার প্রতীকী স্টাইল হয়ে ওঠে। ‘ফর্জ’ গোল্ডেন জুবিলি হিট ছিল। ‘কারবাঁ’, ‘হামজোলি’ ছবিতে অসাধারণ নৃত্যের কারণে তিনি ‘জাম্পিং জ্যাক অফ বলিউড’ খ্যাতি লাভ করেন। ‘জিনে কি রাহ’, ‘খিলোনা’, ‘কারাভান’, ‘বিদায়ী’, ‘ধর্ম-বীর’ সহ অসংখ্য হিট চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০০০-এর দশকে তিনি বালাজী মোশন পিকচার্সের চেয়ারম্যান হন, যা হিন্দি চলচ্চিত্রের একটি অগ্রণী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।
ব্যক্তিগত জীবন:
জিতেন্দ্র তার স্ত্রী শোভা কাপুরের সাথে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান- একতা কাপুর (বালাজী টেলিফিল্মসের প্রধান) এবং তুষার কাপুর (অভিনেতা)।
সম্মাননা:
জিতেন্দ্র ভারতীয় চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার পেয়েছেন। ফিল্মফেয়ার ও স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস-এর আজীবন সম্মাননা পুরস্কার তার কিছু উল্লেখযোগ্য সম্মাননা। তিনি চলচ্চিত্র ইতিহাসে এক অমূল্য সম্পদ।