জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট

আপডেট: ১ জানুয়ারী ২০২৫, ৪:০৬ এএম

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট: বাংলাদেশের অগ্রণী দগ্ধ চিকিৎসা কেন্দ্র

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত একটি অত্যাধুনিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা ও প্লাস্টিক সার্জারি সেবায় এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাস, উন্নয়ন এবং সেবাসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

প্রাথমিক পর্যায়: ১৯৮৬ সালে দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর উদ্যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাত্র ৬ শয্যার একটি বার্ন ইউনিট চালু হয়। পরবর্তীতে অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেনের প্রচেষ্টায় ২০০৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চত্বরে ৫০ শয্যার একটি পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট স্থাপিত হয়। এরপর শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১০০-এ পৌঁছায়।

জাতীয় ইনস্টিটিউট গঠন: ২০১০ সালের ৩রা জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডজনিত দুর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বার্ন ইউনিটের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। ২০১৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের শয্যাসংখ্যা ৩০০-এ উন্নীতকরণ এবং একটি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

স্থাপনা ও উদ্বোধন: ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে একনেকের সভায় এই ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ৬ই এপ্রিল ঢাকার চাঁনখারপুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর তত্ত্বাবধানে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের ২৪শে অক্টোবর শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউটটি উদ্বোধন করেন এবং ২০১৯ সালের ৪ঠা জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা শুরু হয়।

সুযোগ-সুবিধা: চাঁনখারপুলে অবস্থিত ১.৭৬ একর জমির উপর নির্মিত ১২ তলাবিশিষ্ট এই ইনস্টিটিউটে ৫০০ শয্যা, ২২ শয্যা বিশিষ্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), ২২ শয্যা বিশিষ্ট হাই ডেফিসিয়েন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ১২টি অপারেশন থিয়েটার এবং একটি অত্যাধুনিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড রয়েছে। রোগীদের দ্রুত আনা-নেওয়ার জন্য ভবনের ছাদে হেলিপ্যাড এবং গাড়ি রাখার জন্য ১৮০টি গাড়ির জায়গা রয়েছে। নির্মাণ খরচ হয়েছে ৯১২ কোটি টাকা।

প্রশাসন ও দায়িত্ব: অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম ছিলেন ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালক এবং প্রথম পরিচালক। মন্ত্রী হওয়ার আগ পর্যন্ত ডা. সামন্ত লাল সেন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন।

উল্লেখযোগ্য ঘটনা: ২০১৯ সালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এবং ২০২০ সালে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগিতায় এই ইনস্টিটিউট ব্যবহার করা হয়েছিল।

আরও তথ্যের জন্য: আমরা নিয়মিত এই লেখাটি আপডেট করবো যাতে আপনারা সর্বশেষ তথ্য পেতে পারেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৮৬ সালে ৬ শয্যার বার্ন ইউনিট দিয়ে যাত্রা শুরু।
  • ২০০৩ সালে ৫০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ ইউনিটে উন্নীত।
  • ২০১৮ সালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট উদ্বোধন।
  • ৫০০ শয্যা, আইসিইউ, এইচডিইউ, ১২টি অপারেশন থিয়েটারসহ অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা।
  • চাঁনখারপুলে অবস্থিত ১.৭৬ একর জমির উপর নির্মিত ১২ তলা ভবন।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দুই দগ্ধ শিশু ভর্তি হয়েছে।