জলবায়ু অর্থায়ন

জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে গ্লোবাল ক্লাইমেট মিডিয়া নেটওয়ার্কের আয়োজিত আলোচনায় উন্নত দেশগুলোর দ্বারা অনুন্নত দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বক্তারা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো অনুদানের আশায় থাকে, কিন্তু উন্নত দেশগুলো কৌশলে তাদের ঋণের জালে ফেলে দিচ্ছে এবং 'লস অ্যান্ড ড্যামেজ' এর অর্থও দিচ্ছে না। সেন্টার ফর ক্লাইমেট জাস্টিস বাংলাদেশের পরিচালক অ্যাডভোকেট হাফিজ খান উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণ না কমিয়ে কার্বন বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন ফান্ড থেকে অর্থ আদায় করতে পারছে না, কারণ বাংলাদেশের দক্ষতা অভাব রয়েছে। চেঞ্জ ইনেশিয়েটিভের চিফ এক্সিকিউটিভ এম জাকির হোসাইন ২০টি অনুন্নত দেশের ওপর গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে বলেন, ১৮টি দেশ জলবায়ু অর্থায়নের নামে ঋণের ফাঁদে আটকে পড়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকেও ঋণের ফাঁদে ফেলবে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ বাংলাদেশের কার্বন নিঃসরণ কমানোর এবং নদী ভাঙ্গনে উদ্বাস্তুদের জন্য সঠিক পরিকল্পনা না থাকার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান নাগরিক, গণমাধ্যম এবং যুবদের পজিশন পেপার তৈরির ওপর জোর দিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায়। ওয়াটার কিপার অ্যালাইন্সের শরীফ জামিল উন্নত বিশ্বের কার্বন বাণিজ্যের নামে অনুন্নত দেশগুলোকে ফাঁদে ফেলার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন। গ্লোবাল ক্লাইমেট মিডিয়া নেটওয়ার্কের কনভেনার হাবিব রহমান সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পোস্ট কপে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন দেশের নেগোশিয়েটরদের সাথে কাজের পরিধি বাড়ানো এবং জলবায়ু প্রতিবেদনগুলোকে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করার দাবি জানিয়েছেন। যুব জলবায়ু কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাথে যোগাযোগের এবং মাঠ পর্যায়ের কাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার অভাবের কারণে জলবায়ু ক্ষতির প্রকৃত চিত্র বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে বলেও আলোচনায় উঠে এসেছে। অন্ততঃ ৩০তম জলবায়ু সম্মেলনের আগে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • উন্নত দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়নের নামে অনুন্নত দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে।
  • বাংলাদেশ জলবায়ু ফান্ড থেকে অর্থ আদায় করতে পারছে না।
  • কার্বন নিঃসরণ কমানোর এবং নদী ভাঙ্গনে উদ্বাস্তুদের জন্য সঠিক পরিকল্পনা নেই।
  • বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার অভাব জলবায়ু ক্ষতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে বাধা সৃষ্টি করছে।
  • ৩০তম জলবায়ু সম্মেলনের আগে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।

গণমাধ্যমে - জলবায়ু অর্থায়ন

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে উন্নত ও অনুন্নত দেশের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে।