জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম

জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম: ইতিহাস, রাজনীতি ও প্রভাব

জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম (JUI) পাকিস্তানের একটি প্রভাবশালী ইসলামী রাজনৈতিক দল। ১৯৪৫ সালের ২৬ অক্টোবর, শাব্বির আহমদ উসমানির নেতৃত্বে, জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এই দলের উত্থান ঘটে। পাকিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করে এই দল। বর্তমানে, দলটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত।

জমিয়তের প্রাথমিক দিন:

১৯১৯ সালে ব্রিটিশ ভারতে জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৫ সালের ১১ জুলাই কলকাতার একটি সম্মেলনে শাব্বির আহমদ উসমানিকে সভাপতি করে জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম গঠন করা হয়। শাব্বির আহমদ উসমানির মৃত্যুর পর, জাফর আহমদ উসমানি এর নেতৃত্ব নেন।

পাকিস্তানে জমিয়তের ভূমিকা:

স্বাধীন পাকিস্তানে, মুসলিম লীগের নেতাদের ইসলামী সংবিধান প্রতিষ্ঠায় দ্বিধা দেখা দেয়। ১৯৫১ সালে, জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম ইসলামের ২২ দফা মূলনীতি প্রণয়ন করে। আহমদ আলী লাহোরী, এহতেশামুল হক থানভী, মুফতি মাহমুদ, গোলাম গৌছ হাযারভী, সাঈদ সুলায়মান নদভী, এই সময়কালের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। জমিয়তের বিভিন্ন আন্দোলন, যেমন খতমে নবুওয়াত আন্দোলন (১৯৫৩) এবং 'নেযামুল উলামা'র গঠন (১৯৫৯) ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে, জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম পাকিস্তানের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুফতী মাহমুদ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সীমান্ত প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন। তিনি কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক আইন প্রণয়নের চেষ্টা করেন। কাদিয়ানীদের অমুসলিম সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা করার জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

বিভক্তি ও বর্তমান অবস্থা:

মুফতী মাহমুদের মৃত্যুর পর, জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়, যেমন জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম (স), জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম (ফ), এবং জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম (ন)। প্রত্যেক গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও আদর্শগত পার্থক্য রয়েছে।

জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম পাকিস্তানের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দলটির ইতিহাস, আন্দোলন এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পাকিস্তানের ইতিহাস ও রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৪৫ সালে জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম প্রতিষ্ঠা
  • শাব্বির আহমদ উসমানি প্রতিষ্ঠাতা নেতা
  • ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য
  • পাকিস্তানের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
  • মুফতী মাহমুদের নেতৃত্ব
  • বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্তি