ছুরি

আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩:৫১ পিএম
নামান্তরে:
চাকু
Knife
ছুরি

ছুরি: এক অপরিহার্য হাতিয়ার ও সংস্কৃতির অংশ

ছুরি, চাকু, বা ছোরা - এগুলো শুধুমাত্র কাটার হাতিয়ার নয়, বরং মানব সভ্যতার প্রাচীনতম ও অপরিহার্য অঙ্গ। প্রায় ২৫ লক্ষ বছর আগে থেকেই মানুষ ছুরির মতো ধারালো হাতিয়ার ব্যবহার করে আসছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায় ওল্ডোয়ান যুগের হাতিয়ারগুলোতে। প্রাথমিকভাবে পাথর, হাড় ও চকমকি পাথর দিয়ে তৈরি হলেও, কালক্রমে প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে ব্রোঞ্জ, তামা, লোহা, ইস্পাত, সিরামিক, এবং টাইটানিয়াম দিয়েও ছুরি তৈরি হতে শুরু করে।

ছুরির ব্যবহার:

ছুরির ব্যবহার অত্যন্ত বহুমুখী। শিকার, যুদ্ধ, খাবার রান্না, স্কাউটিং, ক্যাম্পিং, অন্যান্য কাজে ছুরির ব্যবহার চোখে পড়ে। রান্নাঘরের ছুরি থেকে শুরু করে, যুদ্ধের ছুরি, সুইচব্লেড, পকেট ছুরি, কারুকার্যের ছুরি- বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের ছুরি তৈরি হয়েছে। আধুনিক ছুরিগুলোর ব্লেড হয় প্লেইন অথবা করাতের মতো, অথবা উভয়ের সংমিশ্রণ। হ্যান্ডেলের সাথে ব্লেডের সংযোগ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে; পূর্ণ ট্যাং, আংশিক ট্যাং ইত্যাদি।

ছুরির উপকরণ:

ছুরির ফলক তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের ইস্পাত ব্যবহার করা হয়, যেমন কার্বন ইস্পাত, স্টেইনলেস স্টিল, উচ্চ কার্বন স্টেইনলেস স্টিল, এবং লেমিনেটেড ইস্পাত। প্রতিটির সুবিধা ও অসুবিধা আছে। টাইটানিয়াম, সিরামিক, এমনকি প্লাস্টিক দিয়েও ছুরি তৈরি করা হয়।

ছুরির তৈরি:

ইস্পাতের ব্লেড সাধারণত জালিয়াতি বা স্টক অপসারণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। জালিয়াতি পদ্ধতিতে ইস্পাতের টুকরো গরম করে হাতুড়ি দিয়ে আকৃতি দেওয়া হয়। স্টক অপসারণে ধাতু গ্রাইন্ড করে অতিরিক্ত অংশ অপসারণ করা হয়। আকৃতি দেওয়ার পরে ইস্পাতকে তাপ চিকিত্সা করতে হয়। এরপর ছুরিগুলোকে ধারালো করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

ভাঁজ করা ছুরি:

ভাঁজ করা ছুরিগুলোতে ব্লেডকে হ্যান্ডেলের সাথে একটি পিভটের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়। এগুলোতে লকিং মেকানিজম থাকে, যা দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করে। বিভিন্ন ধরনের লকিং মেকানিজম আছে, যেমন লক ব্যাক, বোল্ট লক, লাইনার লক, ফ্রেম লক ইত্যাদি। ভাঁজ করা ছুরি খোলার বিভিন্ন পদ্ধতিও আছে, যেমন নেইল নিক, স্টাড, গর্ত, ডিস্ক, ফ্লিপার, এবং ওয়েভ। স্বয়ংক্রিয় ছুরিগুলোতে স্প্রিং থাকে যা বোতাম চেপে ব্লেড খুলতে সাহায্য করে।

ছুরি ও সংস্কৃতি:

ছুরি শুধুমাত্র হাতিয়ার নয়, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এর আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে। বিভিন্ন রীতিনীতি ও কুসংস্কারের সাথে ছুরি জড়িত। অনেকে বিশ্বাস করেন যে উপহার হিসেবে দেওয়া ছুরি দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি করে। এই কারণে অনেক জায়গায় ছুরি উপহার দেওয়ার রীতি নেই।

ছুরি ও আইন:

ছুরি অপরাধে ব্যবহারের কারণে, অনেক দেশে এর ব্যবহার ও বহন নিয়ন্ত্রিত। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের আইন প্রযোজ্য। সুইচব্লেডের মতো কিছু ধরণের ছুরি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

বিভিন্ন ধরনের ছুরি:

বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের ছুরি ব্যবহার করা হয়। মাংস কাটার ছুরি, রুটি কাটার ছুরি, সবজি কাটার ছুরি, শেফ নাইফ, ইউটিলিটি নাইফ, চিজ কাটার ছুরি, বুচার নাইফ, চপার নাইফ ইত্যাদি এর উদাহরণ।

সারসংক্ষেপে, ছুরি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার যা মানব সভ্যতার সাথে জড়িত। এর ব্যবহার বহুমুখী এবং এর সাথে বিভিন্ন রীতিনীতি, কুসংস্কার, এবং আইনি বিধিনিষেধও জড়িত।

মূল তথ্যাবলী:

  • ছুরি মানব সভ্যতার প্রাচীনতম হাতিয়ারগুলির মধ্যে একটি।
  • এটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন রান্না, শিকার, এবং যুদ্ধ।
  • ছুরির তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়।
  • ছুরির সাথে বিভিন্ন সংস্কৃতির রীতিনীতি ও কুসংস্কার জড়িত।
  • অনেকে দেশে ছুরির বহন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ছুরি

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ঘটনাস্থল থেকে ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।