বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড (BFCB)। এটি চলচ্চিত্রের জনসাধারণের কাছে মুক্তির জন্য সার্টিফিকেশন প্রদানের দায়িত্ব পালন করে। এর পূর্বে এটি ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড’ নামে পরিচিত ছিল। দীর্ঘদিনের চলচ্চিত্রকর্মীদের দাবীর মুখে ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এর নাম এবং কাঠামো পরিবর্তন করা হয়। ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন, ২০২৩’ অনুযায়ী এটি ১৫ জন সদস্য নিয়ে পুনর্গঠিত হয়।
প্রাথমিকভাবে, ১৯৭৭ সালে ‘সেন্সরশিপ অব ফিল্ম রুলস’ অনুযায়ী চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড গঠিত হয়েছিল। এটি চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু পরীক্ষা করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, ধর্মীয় অনুভূতি ইত্যাদি বিষয় ধ্যানে রাখা হতো। একজন চেয়ারম্যানের অধীনে একজন ভাইস চেয়ারম্যান, একজন সচিব এবং ছয়জন পরিদর্শক নিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো হতো। প্রতিবছর সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করে চলচ্চিত্র ছাড়পত্র প্রদান করতো।
২০২৪ সালে নতুন আইনের মাধ্যমে সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠিত হয়। এর চেয়ারম্যান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব। বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চলচ্চিত্র), জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি এবং বিভিন্ন চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ থাকেন। এছাড়াও স্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক জাকির হোসেন রাজু, নির্মাতা রফিকুল আনোয়ার রাসেল, চলচ্চিত্র প্রযোজক জাহিদ হোসেন, চলচ্চিত্র সম্পাদক ইকবাল এহসানুল কবির, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ, নির্মাতা খিজির হায়াত খান ও নির্মাতা তাসমিয়া আফরিন মৌ সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ বোর্ডে সদস্য হিসেবে কাজ করেন।
চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড চলচ্চিত্রের মান নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষা এবং জনসাধারণের জন্য যথাযথ চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য কাজ করে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশে অবদান রাখে।