গোপনীয় তথ্য: একটি বিশ্লেষণ
গোপনীয় তথ্য (Classified Information) বলতে সাধারণত এমন সরকারি নথি, তথ্য, বা বস্তুকে বোঝায় যা সরকার সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচনা করে এবং অন্যদের কাছ থেকে সুরক্ষিত রাখতে চায়। এই তথ্যগুলির অপব্যবহার আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গোপনীয় তথ্যের অ্যাক্সেস পেতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ছাড়পত্র (Security Clearance) থাকা এবং তথ্যটি জানার দরকার বা অধিকার থাকা অপরিহার্য। ছাড়পত্র প্রদানের পূর্বে আবেদনকারীর পশ্চাতাল যাচাই করা হয়।
গোপনীয় নথিগুলিকে গুরুত্বের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্তরে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যেমন: সীমিত (Restricted), গোপনীয় (Confidential), গোপন (Secret), এবং সর্বোচ্চ গোপনীয় (Top Secret)। প্রতিটি স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ব্যবহারের বিধি বিধান ভিন্ন ভিন্ন। সময়ের সাথে সাথে কিছু গোপনীয় তথ্য কম সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে এবং তা জনসাধারণের জন্য মুক্ত করা যেতে পারে। তথ্য স্বাধীনতা আইন এর মাধ্যমে জনগণের গোপনীয় তথ্য জানার অধিকারও অনেক দেশে স্বীকৃত।
বিভিন্ন দেশে গোপনীয় তথ্য শ্রেণীবদ্ধকরণের পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন হলেও, সাধারণত ব্রিটিশ মডেল অনুসরণ করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১০ সালের নির্বাহী আদেশ ১৩৫২৬ অনুযায়ী
আইন অমান্য করা, অদক্ষতা বা প্রশাসনিক ভুলভ্রান্তি গোপন করার
উদ্দেশ্যে অথবা
কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা কে বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা
করার উদ্দেশ্যে কোন তথ্য উপাত্ত কে গোপনীয় হিসেবে শ্রেনীবদ্ধ করা যাবেনা।
তবে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকারী গোপন নথি ফাঁস হওয়ার ঘটনাও বিরল নয়। শ্রেণীবদ্ধকরণ পদ্ধতি তথ্য সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কিন্তু তা নিখুঁত নয়। অনেক দেশে গোপনীয়তার বিভিন্ন স্তর (যেমন Top Secret, Secret, Confidential, Restricted) এবং অতিরিক্ত চিহ্ন (যেমন: LIMDIS, NOFORN, ORCON) ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিক গোপনীয়তা বিনিময় ক্ষেত্রে ও গোপনীয়তার বিশেষ স্কিম (যেমন ATOMAL) প্রয়োগ করা হয়।
বেসরকারী সংস্থাগুলিও তাদের বাণিজ্যিক গোপনীয়তা, আইনি কার্যধারা, আর্থিক তথ্য ইত্যাদি সুরক্ষার জন্য নিজস্ব গোপনীয়তা ব্যবস্থা ব্যবহার করে থাকে। তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা এবং এর অপব্যবহার রোধে আইনি ব্যবস্থা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।