খারকিভ: ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত খারকিভ দেশটির একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি স্লোবোজানশ্চিনা ঐতিহাসিক অঞ্চলের বৃহত্তম শহর এবং খারকিভ অব্লাস্ট ও খারকিভ রায়নের প্রশাসনিক কেন্দ্র। সর্বশেষ জনসংখ্যা গণনার তথ্য অনুযায়ী, এখানে প্রায় ১৪,৪৩,২০৭ জন বাস করে। ১৬৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত খারকিভ ক্ষুদ্র দুর্গ হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তীতে ইউক্রেনীয় শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৯১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৩৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এটি ইউক্রেনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ছিল।
খারকিভ ইউক্রেনের একটি প্রধান সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষা ও পরিবহন কেন্দ্র। আনুনসিয়েশন এবং ডোরমিশিয়ন ক্যাথেড্রাল, মুক্তি সরণির রাজপ্রাসাদ ভবন এবং খারকিভ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর কিছু উল্লেখযোগ্য স্থাপনা। উয়েফা ইউরো ২০১২-এর একটি স্বাগতিক শহর ছিল খারকিভ। অর্থনীতিতে শিল্পখাতের গুরুত্ব অপরিসীম। যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক শিল্পের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। মোরোজোভ নকশা ব্যুরো, মালিশেভ ট্যাঙ্ক কারখানা, খার্ট্রন, টার্বোঅ্যাটম এবং আন্তোনভ-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলি এখানে অবস্থিত ছিল।
খারকিভ নামকরণের পেছনে কিংবদন্তি প্রতিষ্ঠাতা খারকোর নামের সাথে যুক্ত একটি কাহিনী রয়েছে। শহরটির অন্যান্য নাম হলো চারকো, চারকোভ এবং জাখারপোলিস। ব্রোঞ্জ যুগের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন খারকিভে পাওয়া গেছে। স্কাইদ ও সামারিটানরা এখানে বসবাস করেছেন। দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীতে এখানে চেরিয়ানোকভ সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। নিপ্রো নদীর তীরে ১৬৫৪ সালে যুদ্ধের ফলে অনেকে খারকিভে আশ্রয় নিয়ে বসতি স্থাপন করে। এই অঞ্চল পূর্বে কসাক হেতমানেতে-র অংশ ছিল। লোপান এবং খারকিভ নদীর তীরে বসতি গড়ে ওঠে। ইভান ক্রিভোশলিক ছিলেন সেসময়ের নেতা। চুহিভের একটি স্থানীয় প্রশাসনিক দপ্তর খারকিভের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করত। ১৬৫৬ সালে ভোয়িন সেলিফোন্তোভ প্রথম প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এখানে একটি দুর্গ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। সেসময় খারকিভের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১০০০।